Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

subirএকুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী (৬৫) আর নেই। সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার জীবনাবসান হয়েছে। সোমবার (৬ মে) দিনগত রাত ৪টা ২৬ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত সুবীর নন্দীর কন্যা ফালগুনী নন্দীর স্বামী ডা. রাজেশ সিকদার। ফালগুনীও তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, ‘আমার বাবা নেই’।

দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগতে থাকা সুবীর নন্দী গত ১৪ এপ্রিল রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। এক পর্যায়ে লাইফ সাপোর্টও দেওয়া হয়।

chardike-ad

১৮ দিন সিএমএইচে থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে সেদিনই এই শিল্পীর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু হাসপাতালের এমআইসিউতে চিকিৎসাধীন সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর একাধিকবার হার্ট অ্যাটাক হয় সুবীর নন্দীর।

একনজরে সুবীর নন্দী: সুবীর নন্দীর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জের হোকুমার তেলিয়াপাড়া চা বাগানে, মেডিকেল অফিসার সুধাংশু নন্দী ও পুতুল রানী দম্পতির ঘরে। সংগীতে মায়ের কাছেই ৭-৮ বছরে হাতেখড়ি। পড়াশোনা শেষে দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করলেও সুবীর নন্দী বাংলা সংগীতাঙ্গনে আসন করে নেন সুরের জাদুতেই। তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ১৯৮১ সালে। তবে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে।

আধুনিক সংগীতের পাশাপাশি তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন শাস্ত্রীয় সংগীত, ভজন, কীর্তন এবং পল্লীগীতিতেও। নিজের ভালোলাগার নজরুলসংগীতেও আবেশ ছড়ান সুবীর নন্দী। সংগীতের সব অঙ্গনে মায়া ছড়ানো এই শিল্পী প্রায় পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে গান গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি।

চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে সুবীর নন্দী চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা সংগীতাঙ্গনে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভূষিত হন একুশে পদকেও।

সুবীর নন্দীর গাওয়া ‘ও আমার উড়াল পঙ্খী রে’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘পাখিরে তুই দূরে থাকলে’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভাল’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছো সংসারে’, ‘দিন যায় কথা থাকে’র মতো গান তাকে বাঁচিয়ে রাখবে বাংলা সংগীতাঙ্গনে।