Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

tamim-with-wifeকাছের মানুষরা বলেন, তামিম যেন প্রয়াত পিতা ইকবাল খানের কার্বন কপি। ইকবাল খান ছিলেন প্রাণখোলা স্বভাবের মানুষ। ভোজনরসিক। নিজে ভালো খেতে পছন্দ করতেন। পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব, সুহৃদ ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়েও একসঙ্গে হৈ চৈ করা এবং অতিথি আপ্যায়ন ছিল তার বিশেষ গুণ।

ছোট ছেলে তামিমও তেমনি। সেই ছেলেবেলা থেকেই ভালো খাবারের প্রতি রাজ্যের আগ্রহ তামিমের। তবে ফিটনেসের কথা ভেবে আর মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ে রসনা বিলাসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হচ্ছে এখন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি শরীর চাঙ্গা ও ফুরফুরে রাখতে খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন অনেকটাই। যে বিরিয়ানি, কাচ্চি, মোরগ পোলাও, হালিম, গরু ভুনা ছিল খুব পছন্দের খাবার, আজকাল তার ধারকাছ দিয়েও যান না তেমন।

chardike-ad

নিজে রিচ ফুড খাওয়া কমিয়ে দিলেও আপ্যায়ন, বন্ধুদের নিয়ে কোন রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া, উৎসব-পার্বণে আপ্যায়নটা এখনো আছে আগের মতই। দেশের বাইরে জাতীয় দলের অ্যাসাইনমেন্টে তামিম রীতিমত একটা বহর নিয়ে ডিনার বা লাঞ্চ করতে যান। বেশিরভাগ জুনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে নিয়ে মজা করে একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নামি ও প্রসিদ্ধ রেস্টুরেন্টে খাবার রেকর্ডটা খুব বেশি তামিমের। সেটা দেশের মাটিতেও চলে।

এর বাইরে ঈদ-পহেলা বৈশাখ ও অন্যান্য পার্বনেও তামিম আপনজনদের আপ্যায়ন করাতে পছন্দ করেন। বন্ধু স্থানীয় অনেকেই তামিমের আতিথ্য গ্রহণও করেন। ভালো মন্দ খাবারের পাশাপাশি জমজমাট নির্মল আড্ডা হয়। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তামিম যা খুব ভালোবাসেন।

মনে হচ্ছিলো এবারো সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। যেহেতু তিনি প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন না, তাই বাংলা ১৪২৬ উদযাপনটা হবে তার ঘটা করে। চট্টগ্রামের খান পরিবারের একটা প্রজন্মের কনিষ্ঠ সদস্য পরিবার পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ এবার বেশ আনন্দ-উল্লাসে পহেলা বৈশাখ পালন করবেন।

কিন্তু জানা গেছে তার উল্টো হবে এবার। ‘আপনি তো প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন না। মাত্র দেশের বাইরে থেকে ঘুরে এলেন। এবার নিশ্চয়ই খুব উৎসব হৈ চৈ করে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবেন?’

এমন প্রশ্ন শুনে খানিক্ষণ চুপ থাকলেন তামিম। তারপর যা বললেন, তার সারমর্ম হলো এবারের পহেলা বৈশাখে কোনোরকম আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে নারাজ তিনি। তার মনে এখনো ক্রাইস্টচার্চে ঘটে যাওয়া সেই সন্ত্রাসী হামলায় অকালে প্রাণ হারানো মানুষদের প্রতি সমবেদনা।

সেই সাথে বাংলাদেশের যে ৫ জন ওই ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি যারপরনাই সহানুভুতিশীল তামিম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তাই কোনরকম আনন্দ উল্লাস না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন তিনি।

তামিমের কথা, ‘প্রতিবার অনেক মজা করি। খেলা না থাকলে, ফ্রি থাকলে পরিবার ও বন্ধু আপনজনের সাথে হৈ চৈ করে কাটাই। তবে এবার পহেলা বৈশাখটা আমি সাদামাটাভাবে পালন করতে চাই। অন্যবারের মত হৈ চৈ ও ঘটা করে পালনের ইচ্ছে নেই। আর সেটা মোটেই ভালো দেখাবে না। খুব খারাপ দেখায়, খানিক অমানবিকও হবে।’

পরক্ষণেই তামিম বলেন, ‘এইতো সেদিন নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে আমরা হারিয়েছি আমাদের দেশের ৫জন ভাইকে। তাদের পরিবারের কি অবস্থা এখন? দেশের বাইরে প্রবাসে সন্ত্রাসী হামলায় অকালে ঝড়ে গেছে ৫০টি তরতাজা প্রাণ। তাদের আপনজনদের কান্না থামেনি এখনো। তারা প্রতিনিয়ত সেই নিহত হওয়াদের অভাববোধ করছেন। সেখানে আমরা যদি বর্ষ বরণে উচ্ছাস-উল্লাসে মেতে উঠি, সেটা কেমন দেখায়? তাই আমি কোনরকম ঘটা করে বর্ষবরণে না গিয়ে যারা মর্মান্তিকভাবে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আল্লাহ তাদের পরিবারের ওপর দয়া বর্ষণ করুন- এটাই আমার নববর্ষের কামনা এবার।’