দেশজুড়ে ইয়াবা ও ফেনসিডিলের মতো মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে সরকার মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে এটাই কাম্য। তবে উদ্বেগজনক তথ্য হল, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যে সরিষার মাধ্যমে ভূত সারানোর কথা তার ভেতরেই যদি ভূত থাকে, তাহলে সমস্যার সমাধান কত কঠিন হয়ে পড়ে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আলম সরোয়ার্দীর বাসা থেকে ৪৯ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরে থানা থেকে সরোয়ার্দীকে আটক করে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করা হয়।
এ মামলায় কনস্টেবল আসাদুজ্জামানসহ আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে আসাদুজ্জামান, সরোয়ার্দীসহ অনেকের জবানবন্দিতে এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলামের নামও উঠে আসে।
আসাদুজ্জামানের জামিন শুনানির সময় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আসে যে, ওসি কামরুল ইসলাম উল্লিখিত ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার পরেও তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। এ মামলায় ওসি কামরুল ইসলামকে কেন আসামি করা হয়নি এবং কেন তদন্ত শেষ হয়নি, সেই ব্যাখ্যা জানতে তদন্ত কর্মকতা সিআইডির মেহেদী মাকসুদকে তলব করেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মেহেদী মাকসুদ আদালতে হাজির হয়ে বলেন, এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আজাদকে।
হাইকোর্ট তখন নাজিম উদ্দিন আজাদকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। হাইকোর্ট কর্তৃক নির্ধারণ করা সময়ে ৪ মার্চ সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আজাদ আদালতে হাজির হন। আদালত এ সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে এক মাসের মধ্যে মামলাটির তদন্ত শেষ করার এবং ওসি কামরুল ইসলামকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
ওসি কামরুল ইসলামের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আর কোনো সদস্য এ ধরনের অপরাধে যুক্ত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা জরুরি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলে মাদকের বিস্তার রোধ করা কঠিন হতে পারে। ইয়াবা, হেরোইন- এসব মাদকের সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকুক তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার।
সৌজন্যে- যুগান্তর