আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে নতুন করে নির্বাচন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়নের ১৯ সদস্য। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইউরোপিয় পার্লামেন্টের ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ব্রান্ডো বেনিফি ইউরোপিয় ইউনিয়নের ফরেইন অ্যাফেয়ার্স এন্ড সিকিউরিটি পলিসি বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ফেডারিকা মোঘেরিনির কাছে দেয়া এক চিঠিতে এই দাবি জানান।
ইউরোপি পার্লামেন্সের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৯ সদ্যসের দেয়া এ চিঠির শুরুতেই বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। এরপরই বলা হয়েছে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা। চিঠিতে ইইউ সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের অধীনে নতুন, স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নের আহ্বান করা এবং অনেক কিছু করা প্রয়োজন।
এই নির্বাচন যেন অবাধ, গণতান্ত্রিক এবং সহিংসতাহীন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ সর্বশেষ ভোটগ্রহণের সময় বিরোধীদলের অধিকাংশই ছিল জেলে, নির্বাচনে অন্তত:পক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অনেকেই। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বেশিরভাগ নির্বাচনী এলাকায় অনিয়ম খুঁজে পেয়েছেন। যেখানে বিরোধী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। আর যত সম্ভব জাল ভোট ব্যালট বাক্স পূর্ণ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে- বাংলাদেশে দুর্নীতি স্থায়ী রূপ লাভ করেছে এবং আমাদের কাছে তথ্য আছে যে, ২০১৪-২০২০ সালের এই সময়ে ইউরোপিয় ইউনিয়নের উন্নয়ন সাহায্য ৬৯০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি কিংবা তার একটি অংশ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
চিঠির নিচে ইউরোপিয় পার্লামেন্টের সদস্যরা তাদের চারটি দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে- বাংলাদেশে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুদান কিভাবে বরাদ্দ ও খরচ করা হয় তা সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চেয়েছে। আর সবশেষ বলা হয়েছে বাংলাদেশে শ্রমিক নির্যাতন বিশেষ করে পোষাক-শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ করার জন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানাতে বলা হয়েচে।
চিঠি দেয়া ১৯ ইইউ সংসদ সদস্য হলেন- সোস্যালিস্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির ব্রান্ডো বেনিফি, নিসা চিল্ডার্স, এনা গোমেজ, ক্যারোলিন গ্রাসওয়ান্ডার হেইঞ্জ, অ্যাগনেস জঙ্গেরিয়াস, ওয়াজিদ খান, ডেভিড মার্টিন, সোরায়া পোস্ট, জুলি ওয়ার্ড। ইউরোপীয়ান পিপল’স পার্টির জন ইনাসিও ফারিয়া, টুনে কেলাম, অ্যান্টিনিও লোপেজ-ইস্টুরিজ হোয়াইট, জিরি পোসপিসিল, ইভান স্টেফেন্স । দ্য অ্যালায়েন্স অব লিবারেল ডেমোক্রেটস ফর ইউরোপ গ্রুপের ম্যারিতজে চ্যাকি, রামোন ত্রেমোসা-আই-ব্যালসেলস। জিইউফ/এনজেএল এর স্টেলিয়স কোউলংলু, মেরজা কাইলোনেন এবং ইসিআর এর এন্থেয়া ম্যাকেনটায়ার। ইসিআর এর অ্যান্থিয়া মেলনটায়ার।
সৌজন্যে- দৈনিক ইনকিলাব