দলে না নেয়া খোদ কোচকেই সমানে পেটালেন ভারতের এক ক্রিকেটার। এর শাস্তি হিসেবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ক্রিকেটারকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে।
সোমবার দিল্লির স্টিফেন গ্রাউন্ডে চলছিল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অনুশীলন। সেখানেই কোচ অমিত ভান্ডারির ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এক দল যুবক। রীতিমতো মাটিতে ফেলে দল বেঁধে মারধর করা হয় দিল্লির নির্বাচক প্রধানকে। হকি স্টিক ও রড দিয়ে ভান্ডারীর মাথায় ও কানের পাশে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিভিল লাইন্সে সন্ত প্যারামানান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা গেছে, দল গঠন করা নিয়েই এই হামলার শিকার হন ভান্ডারি।
হামলার পরপরই বেরিয়ে আসে, ওই ঘটনার নায়ক ছিলেন দিল্লি অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্রিকেটার অনুজ দেধা এবং তার ভাই নরেশ। এ ঘটনায় গোটা দিল্লি ক্রিকেট মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এমন অক্রিকেটীয় আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিরেন্দর শেবাগ, গৌতম গম্ভীর, বিষেণ সিং বেদীসহ সাবেক তারকা ক্রিকটোররা।
টুইটারে শেবাগ লেখেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অত্য়ন্ত লজ্জাজনক। দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আশা করি। ভবিষ্য়তে যেন এর পূনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকেও নজর রাখা উচিত।’ শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় জড়িত ঘটনায় সরব হয়ে টুইটে অভিযুক্তকে আজীবন নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন গম্ভীর, বিষেন সিং বেদিরা।
শেষ পর্যন্ত সেই ক্রিকেটার অনুজ দেধা এবং তার ভাই নরেশকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয় দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডিসিএ)। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট রজত শর্মা অনুজ দেধাকে আজীবন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশেষ কয়েকজন ক্রিকেটারকে দিল্লি দলে নির্বাচিত করতে নির্বাচকদের উপর চাপ সৃষ্টির যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তার তদন্ত করা হবে ডিসিএ’র পক্ষ থেকে। ডিসিএ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘শেবাগ-গম্ভীরের প্রস্তাবের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত হয়ে মূল হামলাকারী অনুজকে আমরা আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি।’
উল্লেখ্য, সৈয়দ মুস্তাক আলি টুর্নামেন্টের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দিল্লি দল। ওই দলে সুযোগ না পেয়ে সোমবার ট্রায়াল চলাকালীনই এসে ভান্ডারীর কাছে ট্রায়ালে সুযোগ না পাওয়ার কারণ জানতে চান এবং ভান্ডারীকে চড় মারেন অনুর্ধ্ব-২৩ দলের ক্রিকেটার দেধা। দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার নূপুর প্রসাদ বলেন, ‘এরপর জনা ১০-১৫ দুষ্কৃতি চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ভান্ডারিকে।’
ঘটনার পর থানায় মামলা করা হয়। এরপর অভিযুক্ত অনুজ দেধা ও তার ভাই নরেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৮ নভেম্বরে ৭৯ জনের প্রাথমিক তালিকায় নাম ছিল দেধার; কিন্তু সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির জন্য চূড়ান্ত ট্রায়ালে নাম না আসায় সে এমন কান্ড ঘটায় বলে জানা যায়।