সাবেক মন্ত্রী এবং সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আর নির্বাচন করছি না। কারণ, মাঠ নির্বাচন করার মতো সমতল নয়। মাঠ এমনই সমতল যে, পুলিশের বুটের তলে পড়তে হয়। আর সন্ত্রাসীদের লাঠির আঘাত খেতে হয়। আমার অফিস ভেঙে দিয়েছে। আমার নিরীহ লোকদের প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার করছে। যারা সমর্থক তাদেরকে পুলিশ প্রতিনিয়ত টেলিফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। এর পরেও ইলেকশন করা যায় নাকি?’
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। মাঠ সমতল না থাকার অভিযোগ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
রবিবার সকালে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে একটি লিখিত পত্রও সিইসির বরাবর জমা দেন তিনি। এতে তিনি ‘নির্বাচনি পরিস্থিতির অবনতি’ কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেন লতিফ সিদ্দিকী।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমি জীবনে অনেক নির্বাচন করেছি। ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করেছি আজকে ২০১৮ সাল, এই রকম নির্বাচন আমার এলাকায় আমি জীবনেও দেখিনি। আমি আর শাহাজাহান সিরাজ ছিলাম দুই প্রতিপক্ষ। কিন্তু আমাদের মধ্যে এই ধরণের কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চিফ ইলেকশন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি। আমি বলে আসলাম— আপনি যে পরিচালনাটা করছেন, এই পরিচালনায় আপনি ব্যর্থ। এই পরিচালনায় নির্বাচন হতে পারে না। তাই আমি মাঠ ছেড়ে দাঁড়ালাম।
‘আমি তাকে (সিইসিকে) বলে দিয়ে আসলাম, আপনি স্বীকার করুন আর না করুন, আপনি ব্যর্থ।’
গত রবিবার সকালে উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সড়াতৈল এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণার সময় আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা ও চারটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি কালিহাতী থানার ওসির প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের সামনে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ওইদিন দুপুর থেকে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছিলেন।
পরে গত বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) অবস্থান ধর্মঘটের চতুর্থ দিনে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
লতিফ সিদ্দিকী ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৭৩, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন।
পবিত্র হজ, হজরত মুহাম্মদ (সা.), তাবলিগ জামাতকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে মন্ত্রিসভা ও দলীয় পদ থেকে অপসারিত হন এবং সংসদ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।