Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

saudiপ্রবাসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশিদের ভূমিকা অতুলনীয়। এ বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। কোনো প্রতিদান নয়, পরিবারের স্বচ্ছলতাসহ সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে নিজ মনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে কাটাতে হয় প্রবাসীদের। হয়তো একেই বলে এক ধরনের দেয়ালবিহীন কারাগার।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র ৮ দিন। নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ততায় সময় কাটছে দলগুলোর। যে যার মতো দিচ্ছে হাজারো প্রতিশ্রুতি। এত প্রতিশ্রুতি তবুও হতাশ রেমিটেন্স যোদ্ধারা। কারণ কোনো দলই প্রবাসীদের সুবিধার কথা চিন্তা করছে না। শুধু নিজেদের সুবিধার্থে ইশতেহারে ব্যস্ত। প্রবাসীদের দুঃখ কেউ বোঝেনি, বোঝেও না।

chardike-ad

দেশের জনগণ তাকিয়ে থাকে বড় দলগুলোর দিকে। নির্বাচনী ইশতেহারের দিকে। কী থাকছে জনসুবিধায়, দেশ ও দশের জন্য। ঠিক তেমনি দেশের প্রায় এক কোটিরও বেশি প্রবাসী রয়েছেন যারা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে তাদের জন্য কতটুকু সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের কথা ভাবা হচ্ছে কিনা?

প্রবাসীরা এ নির্বাচনে আশা করেছিলেন এবার অন্তত তাদের নিয়ে বড় দলগুলো ইশতেহারে ভালো কিছু ভূমিকা নিয়ে আসবেন। কিন্তু সেই আশা নিরাশায় পরিণত হলো যখন কোনো দলের ইশতেহারে আশামূলক কিছুই থাকলো না প্রবাসীদের জন্য। হতাশ হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি প্রবাসীরা।

সম্প্রতি রিয়াদে স্থানীয় একটি পার্কে বর্তমান নির্বাচন এবং প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন হতাশা এবং প্রবাসীদের দুঃখের কথা জানানো হয়।

প্রবাসী ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা একেকজন প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে সৌদি আরবে আছি। আমাদের এ প্রবাস জীবনে বিভিন্ন সরকারের রদবদল দেখেছি কিন্তু কোনো সরকারই আমাদের কথা একটি বারের জন্য ভাবেনি। ভাবেও না। অথচ দেশের উন্নয়নে আমাদের ভূমিকায় সব থেকে বেশি। আমরা রেমিটেন্স পাঠায় বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।

তিনি বলেন, আমরা যেমন ছিলাম তেমনই আছি, প্রবাসীদের কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। আমরা ছুটি শেষে দেশে যাওয়ার পথে কিংবা ছুটি শেষে ফেরার পথে বিমানবন্দরে খুব ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রবাসীদের রেমিটেন্স যোদ্ধা বলা হয় যখন সে জীবিত থাকে। অথচ মরে গেলে লাশটা দেশে পাঠাতে যতসব ঝামেলা তৈরি হয়। কোন মর্গে আছে খবরই থাকে না। এমনো হয় দেশ থেকে টাকা আনতে হয় লাশ পাঠানোর জন্য।

চিন্তা কীভাবে বেশি উপার্জন করা যায়। মা-বাবা, ভাইবোন, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের মান অভিমান পূরণ করতে গিয়ে তারা ভুলে যান নিজের শখ। এমনকি সঠিক ভাবে শরীরের যত্ন পর্যন্ত নেওয়া হয় না অনেকের।’

প্রবাসীরা আরও বলেন, আমাদের পরিবার দেশেও নিরাপদ নয়। প্রায়ই দিনই হামলা-মামলাসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। দেশ-বিদেশ সব জায়গায় আমাদের কলুর বলদের মতো থাকতে হয়। প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য ভালো স্কুল কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে কোটা থাকে না। এসব বিষয়ে সরকারের ভাবা উচিৎ।

‘অনেক সময়ই আমরা দেশে টাকা পাঠিয়ে লোক মারফত জায়গা-জমি কিনতে চেষ্টা করি। অনেক ক্ষেত্রেই সে টাকা মার যায়, প্রবাসী পরিবারের স্ত্রী-সন্তানরাও নানা দুর্ভেগের শিকার হয়। দেশে বসবাসকারী প্রবাসী পরিবারের কাছ থেকে অনেকেই নানা রকম সুযোগ হাতিয়ে নেয়। কাজের প্রচণ্ড চাপ ও কষ্ট আর দেশের নানা টেনশন নিয়েই কাটে আমাদের প্রবাস জীবন।’

‘প্রবাসে থেকে কাজের ফাঁকে আমরা দেশ নিয়ে ভাবি। দেশের রাজনীতি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা দেশে আমাদের কমিউনিটিগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। এই রাজনীতি নিয়ে কতই না ভাবি অথচ আমাদের ভাবার মতো একটু সময় নায় সরকারের।

অনেক প্রবাসী আছে দেশে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক। শুধুমাত্র হয়রানি জীবনের অনিশ্চয়তায় ভোগার কারণে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন না প্রবাসীরা। প্রবাসীদের জন্য সরকার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার। ফলে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। রেমিটেন্সের হার আরও বেড়ে যাবে।

লেখক- আব্দুল হালিম নিহন, সৌজন্যে- জাগো নিউজ