যাত্রীদের কোলাহলে ব্যস্ত থাকে পৃথিবীর বেশির ভাগ বিমানবন্দর। সব অবকাঠামো থাকার পরও যাত্রীহীন বিমানবন্দরের কথা খুব একটা শোনা যায় না। অবাক হওয়ার মতো বিষয় হলেও তেমনই একটি বিমানবন্দর আছে জার্মানির বার্লিনে। যাত্রী না থাকার কারণে সেখানে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্র্যান্ডেনবুর্গ উইলি ব্র্যান্ডট এয়ারপোর্ট (বিইআর) নামের ওই বিমানবন্দরটির রানওয়ে ও আধুনিক টার্মিনাল সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। সিমুলেটেড রিয়েল টাইম ফ্লাইট পর্দায় তথ্য প্রদর্শন করে চলছে অনবরত। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এতে নেই যাত্রী। এ কারণে এটিকে বলা হচ্ছে ভুতুড়ে বিমানবন্দর।
যাত্রী না থাকায় এই বিমানবন্দর হয়ে উঠেছে জার্মান সরকারের ব্যয়বহুল ‘বিব্রতকর’ প্রকল্প। এটির নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই বিলিয়ন ইউরো। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই বিমানবন্দরের পেছনে খরচ হয়েছে ৭.৩ বিলিয়ন ইউরো।
এটি ইউরোপের অন্যতম আধুনিক হাই টেক বিমানবন্দরগুলোর একটি। এর কাজ শেষ হয়েছে সাত বছর আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রীবাহী বিমান এর রানওয়ে দিয়ে উড্ডয়ন বা অবতরণ করেনি। নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোগত কারণে এখনো বিমানবন্দরটি এ অবস্থায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর অনানুষ্ঠানিকভাবে বার্লিন প্রাচীরের পতনের পর নতুন এই বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। সে সময় বার্লিন কর্তৃপক্ষ চিন্তা করেছিল, এই বিমানবন্দর নির্মাণের পর পুরাতন বিমানবন্দর টেগেল ও শোনোফেল্ড বন্ধ করে দেবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি।
২০১২ সালের জুনে জার্মানির বার্লিনে ব্র্যান্ডেনবুর্গ বিমানবন্দর উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি। পরে ২০১৩ সালে বিমানবন্দরটির প্রাথমিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হলে সেটাও সম্ভব হয়নি।
২০১৩ সালে জার্মান এভিয়েশন তদন্তকারীরা বিমানবন্দরটির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থায় বেশ কিছু সমস্যা খুঁজে পেয়েছিল। এ ছাড়া বিমানবন্দরের চার হাজার দরজা ভুলভাবে লাগানো হয়েছিল। খুবই ছোট ছিল এস্কেলেটরের আকার।
উল্লিখিত কারণে অনেক প্রচারণার পরও বিমানবন্দরটি এখনো উদ্বোধন করতে পারেনি জার্মান কর্তৃপক্ষ। আশা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ বিমানবন্দরটির উদ্বোধন হবে। তবে অনেকের ধারণা, ২০২১ সালের আগে সেখানে বিমান চলাচল কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়।