সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি আকায়েদ উল্লাহর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের ছয় অভিযোগ গঠন করেছে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালত।
ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে এক সপ্তাহ শুনানির পর মঙ্গলবার গ্র্যান্ড জুরি আকায়েদকে দোষী সাব্যস্ত করে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, এসব অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে ২৮ বছর বয়সী এই তরুণের।
গতবছর ১১ ডিসেম্বর সকালে অফিসগামী যাত্রীদের ব্যস্ততার মধ্যে টাইম স্কয়ার সাবওয়ে স্টেশন থেকে ম্যানহাটনের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে যাওয়ার সংকীর্ণ ভূগর্ভস্থ পথে নিজের শরীরে বাঁধা ‘পাইপ বোমায়’ বিস্ফোরণ ঘটান আকায়েদ। বোমাটি ঠিকমতো বিস্ফোরিত না হওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হন আকায়েদ।
তার বিস্ফোরণে আহত হন তিন পুলিশ সদস্য। তাকে গ্রেফতারের পর নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি হামলা চালানোর চেষ্টা করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
এ মামলার বিচারে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা; ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার; জনসমাগমস্থল ও পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থায় সন্ত্রাসী হামলা ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সম্পদের ক্ষতি করার চেষ্টার ছয় দফা গুরুতর অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। চলতি বছর ১০ জানুয়ারি ম্যানহাটনের ফেডারেল কোর্টের গ্র্যান্ড জুরি আকায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর পক্ষে মত দেয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জুলিয়া গাটো শুনানিতে দাবি করেন, আকায়েদ কখনওই আইএস সদস্য ছিলেন না। ‘হতাশাগ্রস্ত’ ওই তরুণ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন আত্মহত্যা করার জন্য। অন্যদিকে প্রসিকিউটররা ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করে আদালতে বলেন, ‘আকায়েদ তার শরীরে এমনভাবে বোমা বেঁধেছিলেন যাতে অন্যদেরও ক্ষতি হয়। আর তিনি যে ইন্টারনেটে আইএস এর কর্মকাণ্ডের খোঁজখবর রাখতেন, সেই প্রমাণ তার কম্পিউটারেই পাওয়া গেছে।’
শুনানি শেষে মঙ্গলবার ছয়টি অভিযোগেই আকায়েদকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্র্যান্ড জুরি। তবে তার সাজা কবে ঘোষণা করা হবে, সেই তারিখ আদালত এখনও জানায়নি।
চট্টগ্রামের আকায়েদ বড় হয়েছেন ঢাকার হাজারীবাগে। আট বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর প্রথমে ট্যাক্সিক্যাব চালালেও পরে একটি আবাসন নির্মাতা কোম্পানিতে বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ নেন। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস থাকেন ঢাকায়। ঢাকার জিগাতলার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গতবছর ডিসেম্বরে আকায়েদের স্ত্রী এবং তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশের পুলিশ।