বিগত বছরগুলোর মতো নির্বাচনী বছরেও আলোচনায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিভিন্ন সময় তার মুখে উচ্চারিত শব্দ ‘রাবিস’, ‘বোগাস’ মানুষের মধ্যে বিতর্ক ও বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে। সম্প্রতি সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. ফরাস উদ্দিন ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে ‘ইউজলেস’ বলে ফের তুমুল বিতর্কে জড়ান।
আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়া এবং রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন একাধিক বার। ফলে দৃশ্যপট পাল্টে যায় সিলেট-১ আসনের। তার সহোদর ড. একে আব্দুল মোমেনসহ অনেকেই প্রার্থী হওয়ার মনোবাসনা পোষণ করেন।
কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনে থাকছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী। অবশ্য, তিনি রাজনীতি ছাড়তে চাইলেও অবশেষে সে কথা বদল করতে পারেন বলে সংশয় ছিল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের। নির্বাচন করবেন না বলে একাধিক বার ঘোষণা দিলেও ফের প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। শুক্রবার (০৯ নভেম্বর) ছেলে সাহেদ মুহিতকে দিয়ে দলীয় মনোনয়ন কিনিয়েছেন সিলেট-১ আসনের বর্তমান এই সংসদ সদস্য। তার সঙ্গে মনোয়ন সংগ্রহ করেছেন অর্থমন্ত্রীর ভাই জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে মোমেনও। মনোনয়ন সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক একান্ত সচিব জাবেদ সিরাজ।
এদিকে, নিজে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহের পাশাপাশি ভাইকে দিয়ে মনোনয়ন সংগ্রহের ব্যাপারটি নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, আবুল মাল আব্দুল মুহিতেরই টাকায় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ড. মোমেন। ড. মোমেনকে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে তিনি নিজের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বলেও ধারণা করছেন দলের অনেক কর্মী-সমর্থক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের জ্যেষ্ঠ এক নেতা বলেন, আবুল মাল আব্দুল মুহিতের এখন বয়স হয়েছে। কখন কি বলেন, তাও মনে রাখতে পারেন না। আসলে একটা সময় আসে, যখন মানুষকে থেমে যেতে হয়। ওনার এখন থেমে যাওয়া উচিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেতাকর্মীদের অনেকে বলেন, আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কথা বার্তা একেক সময় একেক ধরনের। আগে বললেন, প্রার্থী হচ্ছেন না, এখন আবার প্রার্থী হতে চান, এতে তিনি বিতর্কিত হচ্ছেন। আসলে তিনি কথা দিয়ে কথা রাখলেন না।
সিলেট-১ আসনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও ড. মোমেন ছাড়াও দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. ছহুল হোসাইন।
শুক্রবার (৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলের মনোনয়ন সংগ্রহ করেন তারা। এদিন সিলেটের ছয়টি আসনের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ১২ প্রার্থী।
সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান, সিলেট-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, মিসাবহ উদ্দিন সিরাজ, শাহ মুজিবুর রহমান জকন ও হাবিবুর রহমান, সিলেট-৫ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট-৬ আসনে কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানান দলের সংশ্লিষ্টরা।
সৌজন্যে- বাংলানিউজ