প্রলয়ঙ্করী ঝড় ও বন্যায় বিধ্বস্ত ইতালিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে জরুরি অবস্থা জারি করছে সরকার। গত কয়েকদিনের ঝড়-বন্যায় অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে দেশটির সিসিলি দ্বীপে বাড়ি-ঘর ধসে একই পরিবারের কমপক্ষে ৯ জন মারা গেছেন। দেশটির কৃষিবিষয়ক সরকারি সংস্থার এক মুখপাত্র বলেছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞের ধকল সামলাতে অন্তত এক শতাব্দী সময় লাগবে।
মর্মান্তিক এই বিপর্যয়ে স্ত্রী ও সন্তান হারিয়েছেন গিসিপ্পে গিওর্দানো। তিনি বলেন, আমরা এক ঘর থেকে আরেক ঘরে দৌড়েছি। আমার ছেলে ফেডেরিকো তার এক ছেলের হাত ধরে ছিল। সে আমাকে বলেছিল, বাবা, আমি তার হাত ছাড়বো না। কিন্তু হঠাৎ ঝড়ের আঘাতে পুরো ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। গিসিপ্পো তার এক মেয়েকে নিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও হারিয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যদের।
গিসিপ্পে গিওর্দানো বলেন, বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার জন্য আমি গাড়ির চাবি আনতে যাই। কিন্তু সেই সময় জানালায় বিস্ফোরণ ঘটে। ভেঙে পড়ে ঘর, নিভে যায় বাতি।
রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাট্টিও সালভিনি বলেছেন, ‘ত্রাণ তৎপরতা চালানোর জন্য ইতোমধ্যে ২৫০ মিলিয়ন ইউরো বরাদবদ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয় থেকে ইতালিকে বাঁচানোর জন্য ৪০ বিলিয়নের বেশি ইউরো দরকার।’
বিপর্যয়ে লণ্ডভণ্ড দেশটির সিসিলি দ্বীপ পরিদর্শনে গিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিসিপ্পে কন্তে বলেছেন, ঝড়-বন্যায় বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালানোর জন্য চলতি সপ্তাহে জরুরি অবস্থা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কন্তে বলেছেন, শিগগিরই মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করা হবে।
দেশটির ক্যাস্টেলড্যাসিয়ার মেয়র জিওভান্নি ডি জিয়াসিন্তো বলেন, শহরের বাড়ি-ঘরের ভেতর দুই মিটার উচ্চতায় পর্যন্ত বন্যার পানি উঠেছিল। এছাড়া বন্যার পানির স্রোতে শহরের রাস্তা-ঘাট থেকে অনেক গাড়ি ভেসে যায়। রাস্তার আশ-পাশের অনেক দোকানপাট ও বাড়িঘর ঝড় বন্যায় ভেঙে পড়ার পাশাপাশি ভেসে গেছে।
ভেনিতো শহরের আঞ্চলিক পরিষদের প্রেসিডেন্ট বরার্টো কিয়ামবেটি বলেছেন, প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে আসিয়াগো প্লাটিওয়ের ভাল’ডিআসসা অঞ্চলে প্রায় ৩ লাখ গাছ মাটি থেকে উপড়ে পড়েছে ও ভেঙে গেছে।
সূত্র: ইউরো নিউজ, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।