ইতালিতে প্রস্তাবিত নতুন আইনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর আইন অনুমোদন করেছে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ। এই আইনের ফলে বাংলাদেশিসহ অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এটি কার্যকর করতে এখনো রাষ্ট্রপতির সই বাকি রয়েছে। নতুন আইনে সন্ত্রাস যৌন হয়রানি, মানবপাচার ও মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হচ্ছে।
এছাড়া যে কোন ছোট-খাট অপরাধের কারণে বৈধতা হারাতে পারেন বাংলাদেশি অভিবাসীরা। ফলে অভিবাসীরা ইতোমধ্যে নড়েচড়ে বসেছেন। বেশ কয়েক বছর যাবৎ ইতালিতে অভিবাসী সমস্যা চলছে। চলমান এ অভিবাসী সমস্যা সমাধান করতে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় অভিবাসীদের নতুন আইনের আওতায় এনে অপরাধ কমানোর চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন। এই সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আইন প্রণয়ন করে ইতালির সকল রোম ক্যাম্প বন্ধ করা। ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
স্থানীয় অভিবাসী পরামর্শকারী অফিস টিএমএমের কর্ণধার মোস্তাফিজুর রহমান বোরহান এ ব্যাপারে আমরা ইতালি প্রবাসী একটি পেজে লেখেন, সকল বাংলাদেশিকে অপরাধ হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকা এখনই সময়। কারণ কোন প্রকার দোষ পেলেই বর্তমান সরকারের আমলে স্টে-পারমিটের ওপর আঘাত আনবে। তাই দোষ ত্রুটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি একটি টেলিভিশনে সাক্ষাতে বলেন, ইতালি অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে আছে। তাই ঋণ কমাতে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ অনেক ক্ষেত্র থেকে অর্থনৈতিক চাপ কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে দেশ আস্তে আস্তে ঋণমুক্ত হবে। ঋণমুক্ত হতে নতুন আইনে বাংলাদেশিসহ সকল অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে আনা হবে।
যেসব অভিবাসী এর আগে ইতালিতে মানবিক আশ্রয় চেয়েছে তা এখন স্বল্প আকারে বিশেষ আবেদন হিসেবে গণ্য করা হবে এ আইনে। সেই সঙ্গে কঠোরভাবে তদন্ত করা হবে আশ্রয় প্রার্থীদের আবেদন। একই সঙ্গে অবৈধদেরকে কঠোর হস্তে দমন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইতালিয়ানদের কর্ম ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অবৈধদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত প্রমাণ পেলে বাংলাদেশিরা ইতালিয়ান নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন। এ ব্যাপারে সামাজিক সংগঠন ইল ধুমকেতু অ্যাসোসিয়েশানের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, নতুন আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশি অভিবাসীরা চরম সমস্যার পড়বেন।
ভবিষ্যতে আইনের প্যাঁচে অভিবাসীদের ইতালিতে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। তাই এই কালো আইন বাতিলসহ ১৩ দফা দাবি আদায়ের জন্য সমাবেশ ডাকা হয়েছে ৭ অক্টোবর। তিনি সবাইকে ভিয়া কাবুর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে নিজ অধিকার আদায় করতে আহ্বান জানান। প্রস্তাবিত নতুন আইন প্রসঙ্গে জানতে ইতালি বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবাহান সিকদারকে একাধিক ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ