এখনও গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচ বাকি। এ পর্যন্ত যেটুকু হয়েছে, তাতেও বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি মাঠে না গড়াতেই কীভাবে সুপার ফোরের সূচি নির্ধারণ হয়ে যায়? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
অথচ, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল শুধুমাত্র ভারতকে সুবিধা দিতেই গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই পরিবর্তিত সূচি প্রকাশ করে ফেলেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের সবগুলো ম্যাচ রাখা হয়েছে দুবাইতে আর বাকি দলগুলোকে খেলতে হবে দুবাই এবং আবুধাবিতে।
ভ্রমণক্লান্তি থেকে মুক্তি দিতে, ভারতের খেলাগুলো যেন শুধু দুবাইতে রাখা হয়, এ দাবি করে ভারতীয় বোর্ড বিসিসিআইর পক্ষ থেকে আগেই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ভারতের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো শেষ হওয়ার আগেই, মঙ্গলবার রাতে এসিসি সুপার ফোরের সূচি নির্ধারণ করে ফেলে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরিবর্তিত সূচি প্রকাশ করে তারা। যেটা আগের নির্ধারিত সূচির পুরোপুরি ব্যতিক্রম। অর্থাৎ, এসিসি অনেকটা জোর করেই ভারতের খেলাগুলো দুবাইতে রাখল।
এসিসি কর্তৃক নির্ধারিত সূচি অনুসারে কিন্তু বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারালেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ থাকছে না। কারণ, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে দুবাইতে। যেখানে মুখোমুখি হবে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং গ্রুপ ‘বি’ রানারআপ। কিন্তু এসিসি আগেই নির্ধারণ করে ফেলেছে, দুবাইতে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত এবং বাংলাদেশ।
ভারতকে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ধরে নেয়ার সঙ্গে আগে থেকেই বাংলাদেশকে এসিসি ‘বি’ গ্রুপ রানারআপ নির্ধারণ করে বসে আছে। যা রীতিমতো বিস্ময়কর। অথচ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি এখনও মাঠেই গড়ায়নি। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, আবুধাবিতে, ২০ সেপ্টেম্বর।
দুবাইতে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ খেলতে হলে বাংলাদেশের জন্য বিষয়টা হয়ে যাবে খুবেই কঠিন। কারণ, ২০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে দিবারাত্রির ম্যাচটি শেষ করেই বাংলাদেশ দলকে ছুটতে হবে দুবাইয়ের উদ্দেশে। সেখানে এসে পরদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় আবার নেমে পড়তে হবে মাঠে। রীতিমতো অসম্ভব একটি ব্যাপার। অথচ, এসিসি নির্ধারিত সূচি অনুসারে এটাই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারের কপালের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সূচি এতটাই ব্যস্ত রাখা হয়েছে যে, ক্রিকেট সমর্থকরা একে ঢাকার জ্যামের সঙ্গেও তুলনা করতে ছাড়লেন না। ঢাকার জ্যাম যেমন লেগেই থাকে, তেমনি বাংলাদেশের সূচি লেগেই থাকছে। কারণ, চারদিনের মধ্যে বাংলাদেশকে খেলতে হবে ৩টি ম্যাচ। তাও দুটি ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে। কিভাবে সম্ভভ এটা? এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কিন্তু এতটা ভাবেনি। তারা ভেবেছে, ভারতকে সুবিধা দিতে হবে। অন্যদের কার কী হলো, সেটা ভাবার এত দরকার নেই।
পরিবর্তিত সূচিতে অসুবিধায় পড়ছে পাকিস্তানও। কারণ, সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ তাদেরকে আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে চলে আসতে হবে দুবাইতে। সেখানে ২৩ তারিখ ভারতের বিপক্ষে খেলার পর আবার চলে যেতে হবে আবুধাবিতে। সেখানে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচ তারা খেলবে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যদিও, তাদের তিন ম্যাচের মাঝে একটি করে ফাঁকা দিন থাকছে।
এশিয়া কাপের সূচি নিয়ে শুরু থেকেই চলছিল সমালোচনা। ঠাসা সূচি, ভ্রমণের ধকল ভাবাচ্ছিল দলগুলোকে। সেই সূচিতে পরিবর্তন আনে তারা ঠিকই। কিন্তু তা করা হয়েছে কেবল ভারতের সুবিধা মাথায় রেখে।
এশিয়া কাপের পরিবর্তিত সূচি
২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার
ভারত বনাম বাংলাদেশ (দুবাই)
পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তান (আবুধাবি)
২৩ সেপ্টেম্বর রোববার
ভারত বনাম পাকিস্তান (দুবাই)
বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান (আবুধাবি)
২৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার
ভারত বনাম আফগানিস্তান (দুবাই)
২৬ সেপ্টেম্বর বুধবার
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান (আবুধাবি)
২৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার
ফাইনাল (দুবাই)