ইয়েমেনে আরো ১০ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষের ঝুকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন সেভ দ্য চিল্ডরেন। এর আগে সংস্থাটি দেশটিতে ৪২ লাখের বেশি শিশু দুর্ভিক্ষ ঝুকিতে রয়েছে বলে জানায়। আর চলতি বছর শেষে অপুষ্টিতে ভুগে আনুমানিক প্রায় ৪০ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে তারা। খবর বিবিসির।
ইয়েমেনে যুদ্ধের ফলে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং মুদ্রার দরপতন হওয়ায় অনেক পরিবার খাদ্যের যোগান দিতে পারছে না। এছাড়াও আরেকটি ঝুকি হচ্ছে দেশটির বিদ্রোহী অধ্যূষিত অঞ্চলগুলোতে সাহায্য আসার এবং পণ্য চলাচল করার মুল বন্দর হোদাইদাতে চলছে যুদ্ধ। ফলে সে বন্দর দিয়ে সাহায্য পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না দেশটিতে।
সেভ দ্য চিল্ডরেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী হেলে থোরিং বলেন, দেশটির লাখ লাখ শিশু জানে না পরের বেলার খাবার কোথা থেকে আসবে কিংবা আদৌ আসবে কিনা। উত্তর ইয়েমেনের একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি দেখেন, শিশুরা এতই দূর্বল যে তারা কাঁদতে পর্যন্ত পারছে না। ক্ষুধা তাদের তাদের সর্ম্পূর্ণ শরীরকে নিস্তেজ করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন এই যুদ্ধ ইয়েমেনের পুরো একটা প্রজন্মকে মেরে ফেলতে পারে। কারণ এই শিশুদেরকে বোমা থেকে শুরু করে ক্ষুধা আর নানা রোগসহ বহুমূখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এছাড়া দেশটিতে যুদ্ধের ফলে শিক্ষক, সরকারী কর্মচারীসহ অনেক পেশাজীবী কমপক্ষে দুই বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটিতে খাদ্যমূল্য আগের তুলনায় প্রায় ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন এর মতে যুদ্ধের সময়ে ইয়েমেনি রিয়াল প্রায় ১৮০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে এই ইয়েমেনি রিয়াল দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন দরপতনের স্বীকার হয়েছে। যা ইয়েমেনের জনগণকে আরো বেশি বিপদে ফেলবে।
এছাড়াও যুদ্ধের কারণে দেশটির পণ্য পরিবহণ এবং সাহায্য আসার মূল বন্দর হোদাইদা অবরুদ্ধ করে রাখায় ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা। এই বন্দরটি দিয়ে দেশটির মানুষের খাদ্য সরবরাহ না করলে দুর্ভিক্ষ এবং কলেরার মতো মহামারী রোগ বন্ধ করা যাবে না। গত বছর কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলো।
চলতি মাসের শুরুতে সেভ দ্য চিল্ডরেন জানায় ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী কমপক্ষে চার লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তারা সতর্ক করে বলে যে এর মধ্যে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে ৩৬ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে।