নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী সব দলের জন্য সমান সুযোগ থাকা উচিত মন্তব্য করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলিস্টার ব্রুট বলেছেন, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্যই সব দলের নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার ও বিরোধী দলের কাছে এ মনোভাবই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, ২০১২ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ব্রিটেনের অবস্থান পরিষ্কার। সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলেই নির্বাচন অর্থবহ হবে। আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেই সরকারের বৈধতা পোক্ত হবে। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকারের বৈধতা নির্ধারণ আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশে তিন দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ হাইকমিশন ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রুট এ সব কথা বলেন। সফরকালে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখেছেন। এছাড়া রাজধানীতে ব্রিটিশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত স্বাস্থ্য বিষয়ক দুটি প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিভক্তির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের জন্য ভাল সময় যাচ্ছে না। যুদ্ধের সম্ভাবনাকে কমিয়ে বিশ্বকে আরো নিরাপদ করে গড়ে তোলাই নিরাপত্তা পরিষদের কাজ। সিরিয়া বা মিয়ানমারের দিকে তাকালে দেখা যায় পরিস্থিতি কতটা জটিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পর শান্তির জন্য যে আকুতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ গঠিত হয়েছিল – তার অনেকটা আমরা বিস্মৃত হতে বসেছি।
তিনি বলেন, মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদন আমাদের পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে। এতে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িতদের সম্পর্কে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক সরাসরি তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়েছে। এই অপরাধগুলো বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। বিশ্বকে এখন নির্ধারণ করতে হবে তারা কি করবে।
আলিস্টার ব্রুট বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় রাখাইনে সহিংসতার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা যাবে – সে সম্পর্কে এই মুহুর্তে পরিষ্কার ধারণা নেই। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এ ধরনের অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে নিরাপত্তা পরিষদের রেফারেন্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বিচারের সম্মুখীন করা বেশ কঠিন। সব দেশ এটিকে সমর্থন দেবে না। তিনি বলেন, বার্মার নিজস্ব তদন্ত চলছে, যার ফলাফল দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে একইসাথে বার্মাকে মানবাধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে আমলে নিতে হবে।