ম্যাচের সময় প্রায় শেষ। যোগ করা সময়ের খেলা চলছে। খানিক আগে একটা হ্যান্ডবলের আবেদন করেও পায়নি কাতার, বাংলাদেশ নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করতেই পারে। গোলশূন্য ড্রতেই ম্যাচটা শেষ হবে মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কাতারের বক্সের ঠিক বাইরে বল পেলেন জামাল ভুঁইয়া। ডান পায়ের মাপা শট পোস্ট ঘেষে জড়িয়ে গেল জালে। খানিক পরেই বাজল শেষ বাঁশি, উল্লাসে ফেটে পড়ল বাংলাদেশ। কাতারকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত হলো, প্রথম বারের মতো এশিয়ান গেমসের নকআউট পর্বে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে থাইল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ড উজবেকিস্তানের কাছে হেরে যায়, ফলে জয় পেয়ে দ্বিতীয় হয়েই পরের পর্বে উঠেছে বাংলাদেশ। নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম র্যাঙ্কিংয়ে ৯৬ ঘর এগিয়ে থাকা কাতারকে হারাল বাংলাদেশ।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের চেয়ে রক্ষণ সামলানোর দিকেই বেশি মনযোগ ছিল বাংলাদেশের। অথচ প্রথমার্ধে সেরা দুইটি সুযোগ পেয়েছিল লাল সবুজের দলটিই। ১৭ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান বাংলাদেশের মাহবুবুর রহমান । কিন্তু একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। প্রথমার্ধের পরের দিকে আরও একটি সুযোগ পায় বাংলাদেশ, কর্নার থেকে ফাঁকা হেড করেন তপু বর্মণ। কিন্তু তাঁর হেড সরাসরি চলে যায় কাতার গোলরক্ষকের কাছে। এর মধ্যে কাতারও পেয়েছিল একটি দারুণ সুযোগ। কিন্তু তাদের ফ্রিকিক পোস্টে লেগে ফিরে আসে। কাতার এই অর্ধে অনেকগুলো আক্রমণ করেও গোল করতে পারেননি।
বিরতির পর কাতার আবারও চেপে ধরে বাংলাদেশকে। তবে এবার বাংলাদেশও পালটা আক্রমণে ভীতি ছড়াচ্ছিল। এরকম একটা আক্রমণ থেকেই ১৫ নম্বর জার্সিধারী বিপ্লব গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন । কিন্তু তাঁর শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন কাতারের বদলি গোলরক্ষক। এর মধ্যে ম্যাচের শেষদিকে মনে হচ্ছিল, কেউই আর গোল করতে পারবে না। যোগ করা সময়ে কাতারের একজনের ক্রস ত্রিপুরার হাতে লাগলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। ফিরতি আক্রমণ থেকে বল পেয়েই জামাল ভুইঁয়া এনে দিলেন সেই মুহূর্ত, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো উঠল এশিয়ান গেমসের নকআউট পর্বে।