বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে গচ্ছিত স্বর্ণের ধরন ও পরিমাণ বদলে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি বেশ তুলকালাম চলছে। একটি জাতীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশের পরপরই তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে এ অভিযোগের জবাব দিয়েছে ব্যাংকটি।
বাংলাদেশর ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ খুরশিদ ওয়াহাব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভল্টে ঢোকার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র জব্দ হওয়া স্বর্ণের।
তার দেয়া তথ্য মতে, কাস্টমস বা অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চোরাচালান বা চুরি-ডাকাতির যে স্বর্ণ আটক করে, সেগুলো কোর্টের নির্দেশক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করে থাকে।
যখন আদালতের নির্দেশ আসে যে রাষ্ট্রের অনুকূলে এই স্বর্ণ বাজেয়াপ্ত করা হল তখন সেটি বিক্রি করে তার অর্থ সরকারকে দিয়ে দেয়া হয়। রাষ্ট্রের অনুকূলে বিষয়টি কোর্টে নিষ্পত্তি হলে, এমন স্বর্ণ যদি বার আকারে থাকে, বলা হয় তা প্রায় ৯৯ শতাংশ খাটি, তা আসলে ক্রয় করতে পারে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে।
মোহাম্মদ খুরশিদ ওয়াহাব জানান, বাংলাদেশে ব্যাংকের ওই ভল্টে ঢোকার অধিকার রয়েছে শুধু কারেন্সি অফিসার, জয়েন্ট ম্যানেজার বুলিয়ন (স্বর্ণ), জয়েন্ট ম্যানেজার ক্যাশ এবং ডিজিএম ক্যাশ। তারাই শুধু ঢুকতে পারেন। কারেন্সি অফিসার যদি প্রয়োজন মনে করেন তবে তার অনুমতি যিনি পাবেন তিনি শুধু যান। এখানে গভর্নর বা ডেপুটি গভর্নর এবং সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তারা, অননুমোদিত ব্যক্তিদের যাওয়ার কোন অধিকার নেই।
কিন্তু এতসব নিরাপত্তার ফাঁক গলিয়ে স্বর্ণ নিয়ে গরমিলের যে অভিযোগ আসছে সেটি সম্পর্কে বাংলাদেশে ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলছেন, “আমি এটিকে এখনো পর্যন্ত অভিযোগই বলবো। কিন্তু যদি এমন কিছু যদি সত্যিই হয়ে থাকে তবে বাংলাদেশে ব্যাংকে ভীষণ খারাপ দিন যাচ্ছে।” “আমি বলবো এর পুরো ওভারহলিং দরকার। মানুষের মনে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে সন্দেহ বেড়ে গেছে।”
২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় দশ কোটি দশ লক্ষ ডলার চুরি হয়েছিলো। যাকে বলা হয় আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক তহবিল লোপাট বা রিজার্ভ চুরির ঘটনা। সেই অর্থ পুরোটা এখনো উদ্ধার হয়নি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা