সিঙ্গাপুর সামিটে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়াকে তাগিদ দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন বলেন, দ্রুত চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দু’দেশের নেতা বিশ্ববাসীর তোপের মুখে পড়তে পারেন। শুক্রবার সিঙ্গাপুরে এক সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
তার বক্তব্যে মুন বলেন, ডনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন যদি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের এ আলোচনায় সফল হতে না পারেন তাহলে তারা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কঠোর ক্ষোভের মুখে পরবেন। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, তার বিশ্বাস উভয় দেশই সম্পন্ন হওয়া চুক্তিকে সম্মান করে। অনেক বাধাবিপত্তি এলেও তারা এ চুক্তি বাস্তবায়ন করবে কারণ আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সামনে তারা কথা দিয়েছেন। গতমাসে ডনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উনের মাঝে অনুষ্ঠিত হওয়া ঐতিহাসিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিঙ্গাপুরেই।
এখানে দুই দেশ কোরিয়া উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গিকার করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও উত্তর কোরিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হন। উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটনের শর্তকে একতরফা ও জবরদস্তিমূলক বলে অভিহিত করে।
মুন জায়ে ইন বলেন, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। এ বছর তিনি উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে দুবার সাক্ষাৎ করেছেন। মুন বিশ্বাস করেন, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ উত্তর কোরিয়াকে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে। কিন্তু তিনি উত্তর কোরিয়াকে এ চুক্তি বাস্তবায়নে আরো বেশি জোর দিতে আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য। ইতিমধ্যে তারা একসঙ্গে বসে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। তাদের হাতে আর কোনো রাস্তা খোলা নেই। একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করে নেন এ চুক্তি বাস্তবায়িত করা খুব সহজ হবে না। তবে যতই বাধাবিপত্তি আসুক না কেন তিনি চুক্তির সফলতা নিয়ে এখনো আত্মবিশ্বাসী। এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা কোরিয়া যুদ্ধে নিহত দুই মার্কিন সেনার দেহাবশেষ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। ২০১৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ায় পাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার এক সেনার দেহাবশেষ ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০১ সালে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এক যৌথ সন্ধান অভিযানকালে তারা এ দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছিল।