Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

facebook googleএকবার ভাবুন তো, ফেসবুক খুলতেই দেখলেন, আপনি কবে মারা যাবেন, সে কথা লেখা আছে। হ্যাঁ, ফেসবুক আপনার মৃত্যুর তারিখটিও বলে দিতে পারবে। আপনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই এখন ওদের হাতে। এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে নানা পূর্বাভাস দিতে পারে ফেসবুক। তারা এমন একটি অ্যালগরিদম তৈরি করছে, যা দিয়ে বিবাহসংক্রান্ত পূর্বাভাস থেকে শুরু করে মৃত্যুর পূর্বাভাস পর্যন্ত জানাতে পারবে।

ইন্ডিপেনডেন্ট অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের জীবনের প্রতিটি দিকে নজরদারি। এখন তারা নতুন একটি বিষয় নিয়ে কাজে নেমেছে। মানুষ কখন মারা যাবে, তার পূর্বাভাস জানাবে ফেসবুক।

chardike-ad

মৃত্যুর পূর্বাভাস জানানোর অ্যালগরিদম তৈরিতে একটি পেটেন্ট আবেদনও করেছে ফেসবুক। ‘দ্য প্রেডিকটিং লাইফ চেঞ্জেস’ নামের ওই পেটেন্টের খবর প্রথম জানায় নিউইয়র্ক টাইমস। তাতে বলা হয়, লাইফ চেঞ্জ প্রেডিকশন ইঞ্জিন নামের যে প্রযুক্তি তৈরি করা হবে, তাতে ফেসবুক ব্যবহারকারীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার পূর্বাভাস থাকবে। এর মধ্যে বিয়ে, জন্মদিন, নতুন চাকরি, শিশুর জন্ম, পড়াশোনা, এমনকি মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ ধরনের অ্যালগরিদম তৈরির কারণ হচ্ছে বিজ্ঞাপন। একজন মানুষের জীবনের গভীর তথ্য জানার ফলে তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবে ফেসবুক। যেমন ফেসবুকের অ্যালগরিদম যদি বুঝতে পারে কেউ গর্ভধারণ করেছে, তখন তার সামনে শিশুর নানা পোশাক, খাবারের বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে।

ফেসবুকের ওই পেটেন্ট আবেদন অনুযায়ী, ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের প্রোফাইলে যেসব তথ্য দেন, সেগুলো বিশ্লেষণ করে নিজস্ব পূর্বাভাস দাঁড় করাবে ফেসবুক।

অবশ্য এর আগে ফেসবুক বলেছিল, তাদের পেটেন্টের আবেদনের অর্থ এই নয় যে তারা এটি তৈরি করবে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহার করবে।

সম্প্রতি কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার তথ্য কেলেঙ্কারি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে ফেসবুক। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের যুক্তরাজ্যের একটি নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে লাগিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এর সূত্র ধরেই অনেকেই ফেসবুক ছেড়ে গেছেন। এর মধ্যে অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক রয়েছেন। তিনি বলেছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ে প্রচুর অর্থ আয় করছে ফেসবুক। কিন্তু বিনিময়ে ব্যবহারকারীরা কিছুই পান না।

এর আগে সম্প্রতি গুগল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়ার কথা জানায়। এরপরই ফেসবুক এ ধরনের প্রযুক্তির পেটেন্ট করার কথা জানাল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গুগলের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা রীতিমতো মানুষের জীবনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় প্রায় নির্ভুলভাবে অনুমান করতে পারছে। গবেষকদের দাবি, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক উত্তর মিলেছে। কোন ব্যক্তিকে কত দিন হাসপাতালে থাকতে হবে? এ প্রশ্নের উত্তরেও ৮৭ শতাংশই নির্ভুল গুগলের প্রযুক্তিটি। শুধু তা-ই নয়, কোনো ব্যক্তির পুনরায় হাসপাতালে ভর্তির ভবিষ্যদ্বাণীর ক্ষেত্রেও ৭৭ শতাংশ নির্ভুল এই মডেল। তবে এই মডেল শুধু তখনই কাজ করবে, যখন কোনো রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির সম্পূর্ণ তথ্য তার কাছে থাকবে।

আসলে মডেলটি হাসপাতালের ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ডস থেকে কোনো ব্যক্তির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবে। এই প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি, যা ইএইচআর সিস্টেম থেকে কোনো রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির সম্পূর্ণ তথ্য নিয়ে তবেই রোগীর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করবে গুগল।

ইউসি সানফ্রান্সিসকো, স্ট্যানফোর্ড মেডিসিন এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক আর গবেষকেরা মিলে এই বিশেষ প্রযুক্তি তৈরি করেছেন। এই বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে গুগল জানাবে আপনার মৃত্যুর দিনক্ষণও। এ প্রযুক্তির বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ সাময়িকীতে।