এশিয়া মহাদেশে ফুটবলের কথা চিন্তা করলেই দক্ষিণ কোরিয়ার কথা সবার আগে চলে আসে। মূলত দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া এশিয়ার ফুটবলের কথা ভাবাই যায় না। দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় ফুটবল ফিফার কাছে ইংরেজিতে কোরিয়া প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। দক্ষিণ কোরিয়ার ডাকনাম ‘এশিয়ার বাঘ’। দক্ষিণ কোরিয়া এবার নিয়ে দশবার ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করেছে। সেই সাথে এই দলটিই এশিয়ার একমাত্র দল যারা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ২০০২ সালের বিশ্বকাপে দলটি এই গৌরব অর্জন করে।
দক্ষিণ কোরিয়া একই সাথে এশিয়ার সবচেয়ে সফলতম একটি জাতীয় ফুটবল দল। দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপে দলটি একমাত্র এশীয় দল যারা বাছাই পর্বে কোনো খেলায় না হেরেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এছাড়াও দলটি এএফসি এশিয়ান কাপের প্রথম দুই আসরের শিরোপাধারী।
দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার অন্যতম ফুটবল পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত। এশিয়ার বেশ কয়েকটি সম্মানজনক ফুটবল প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করেছে দলটি। এর মধ্যে আছে প্রথম দুইবারে এশিয়ান কাপ জয়। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়াই এশিয়ার একমাত্র দল যারা ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ থেকে ধারাবাহিকভাবে ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলে আসছে।
১৯৫৪ সালে দলটির প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় তারা হাঙ্গেরি ও তুরস্কের বিপক্ষে দুটি খেলা অংশ নেয়। দুটি খেলাতেই তারা যথাক্রমে ৯–০ ও ৭–০ গোলে পরাজিত হয়। এরপর ৩২ বছর পরে তারা আবার বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পায়। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে তারা দ্বিতীয় বারের মতো অংশ নেয়। এবার তারা তুলনামূলকভাবে ভালো করে। প্রথম খেলায় তারা আর্জেন্টিনার সাথে ৩–১ গোলে পরাজিত হয়, দ্বিতীয় খেলায় বুলগেরিয়ার সাথে ১–১ গোলে ড্র করে এবং তৃতীয় খেলায় ইতালির সাথে ৩–২ গোলে পরাজিত হয়।
২০০২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের আগ পর্যন্ত দলটি বিশ্বকাপের কোনো খেলায় জয়লাভ করতে পারেনি। সেবার দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের সাথে যৌথভাবে নিজেদের মাটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিলো।
দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল দলের বর্তমান অধিনায়ক কি সুং ইয়ং। বর্তমানে তিনি ইংলিশ ক্লাব সোয়ানসি সিটির হয়ে খেলে থাকেন। তাদের দলের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেন সিন তেই ইয়ং। দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক অধিনায়ক চা বুম কুন দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেন এবং সর্বোচ্চ গোল করতে সক্ষম হন। রাশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপের একুশতম আসরে ‘এফ’ গ্রুপে রয়েছে ২০০২ সালে সেমিফাইনাল খেলা দলটি। ‘এফ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে রয়েছে জার্মানি, মেক্সিকো এবং সুইডেন। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১৮ জুন সুইডেনের মুখোমুখি হবে রেড ডেভিলসরা। ২৩ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে মাঠে নামবে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ২৭ তারিখ জার্মানির বিপক্ষে মাঠে নামবে দক্ষিণ কোরিয়া।