ভারত থেকে চরম হতাশাই উপহার দিয়েছিল পুরুষ ক্রিকেট দল। আফগানিস্তানের মত দলের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পুড়তে হলো। চারদিকে হতাশা আর ব্যর্থতার খবরের মাঝেও যখন ক্রিকেটটা বাংলাদেশের মানুষকে আনন্দ দিতো, তখন সেই ক্রিকেটও পথ হারিয়ে বসেছিল দেরাদুনে গিয়ে; কিন্তু সত্যিই কি ক্রিকেট এত সহজে হারতে পারে? পারে না।
পারে না বলেই, পুরুষ ক্রিকেটাররা না পারুক, নারী ক্রিকেটাররা বয়ে নিয়ে এলো বাংলাদেশের জন্য দারুণ এক সু-সংবাদ। তৈরি করলো এক গৌরবোজ্জল ইতিহাস। ক্রিকেটের ইতিহাসে (হোক সেটা পুরুষ কিংবা নারী) প্রথম কোনো ট্রফি জয়ের স্বাদ দিলো বাংলাদশের নারী ক্রিকেটাররা। কুয়ালালামপুরের কিনরারা একাডেমি ওভাল মাঠে নারী ক্রিকেটের পরাশক্তি ভারতকে ৩ উইকেটে হারিয়ে নারী এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে নিলো বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলিং তাণ্ডবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১২ রান তুলে ভারত। ভয়ংকর ব্যাটিং লাইনআপের দলটি এদিন খাদিজা-রুমানাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। অধিনায়ক হারমনপ্রীত কাউর ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন। মিথালি রাজ এবং কৃষ্ণমুর্তি ১১ রান করে করেন। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত। রুমানা এবং খাদিজা ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে নেন অধিনায়ক সালমা এবং জাহানারা।
লক্ষ্যটা ধরাছোঁয়ার মাঝেই ছিল। ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন শারমিন সুলতানা এবং আয়েশা রহমান। ওপেনিং জুটিতে আসে ৩৫ রান। এরপর ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে চলে বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। হারমপ্রীত কাউর এসে চতুর্থ বলে তুলে নেন সানজিদাকে (৫)। পঞ্চম বলে ২২ বলে ২৩ করা রুমানা আহমেদ স্টাম্পড হয়ে যান। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রানের। জাহানারা আলম বল ব্যাটে ছুঁইয়ে প্রাণপণে দৌঁড় শুরু করেন।
শেষ পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তের অবসান হয় বাংলাদেশের অসাধারণ বিজয়ে! দুই রান নিতে পেরেছিলেন সালমা আর জাহানারা। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের মাঠটিতে গর্জে উঠে লাল সবুজের দল। গ্যালারিতে কিছু দর্শক চিৎকার করতে থাকেন। গোটা দেশ মেতে উঠে উল্লাসে। দুর্দান্ত অল-রাউন্ড পারফর্মেন্সে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন রুমানা আহমেদ।