বাংলাদেশি আমিনুল ইসলাম বিন আব্দুল নূর এখন মালয়েশিয়ায় পরিচিত দাতো শ্রী আমিন হিসেবে। তবে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে ঝড় উঠেছে মালয়েশিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমনকি টেলিভিশনেও প্রচার করা হচ্ছে আমিনের খোঁজ পাওয়া গেলে যেনো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে জানিয়ে দেয়া হয়।
বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ার নাগরিক হতে পারেন না। তবে পূর্বের সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যদের প্রচুর ঘুষ দিয়ে বাংলাদেশি আমিন মালয়েশিয়ান পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট নিয়েছেন। এখন বিষয়টি তদন্ত করে আমিনকে ধরতে গণপ্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছেন, এসপিপিএ, জেআর জয়েন্ট, বেসটিনেট এবং সিনেরফ্লাক্স নামে চারটি কোম্পানির মালিক আমিন। মালয়েশিয়ায়র নাগরিকত্ব কেনার পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যাবহার করে বাংলাদেশ থেকে মানুষ নেয়ার ব্যবসা চালিয়েছেন তিনি।
মালয়েশিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের জন্যে দেয়া এই প্রচারণায় জানানো হয়েছে, এইসব কোম্পানির নাম ব্যবহার করে মাত্র আট মাসে ২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় ঢুকিয়েছেন আমিন। যার সহায়তা করেছে পূর্ববর্তী নাজিব সরকার। এক্ষেত্রে প্রতি বাংলাদেশির নিকট থেকে ১৫ হাজার রিঙ্গিত (প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা) করে আয় করেছেন তিনি।
পূর্ববর্তী সরকার এককভাবে আমিন এবং তার কোম্পানিকে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়ার অনুমতি দিয়ে মনোপলি ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন মালয়রাও। তাদের অভিযোগ সাবেক শ্রম মন্ত্রী আজমিন খালিদকে মানুষ প্রতি টাকা দিয়ে ভিসাগুলো ম্যানেজ করেছেন আমিন। এছাড়াও শ্রম বিভাগের সাবেক পরিচালক দাতুক টেংকু ওমর টেংকু বট জড়িত এই দূর্নীতিতে।
এদিকে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি কমিউনিটির অভিযোগ, মালয়েশিয়ায় আদম ব্যবসা করে রীতিমত রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি আমিনুর রহমান স্বদেশিদের নিয়ে করেন জমজমাট ব্যবসা। শুধু মালয়েশিায় মানুষ নেয়া নয় বরং দেশে অবৈধ মানুষকে ফেরত পাঠাতেও টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে প্রতিজনের কাছ থেকে হাজার রিঙ্গিত (২২ হাজার টাকা) পর্যন্ত ব্যবসা করেন আমিনুর রহমান এবং তার বেসটিনেট। তবে সম্প্রতি নির্বাচনের আগেই হাবভাব খারাপ বুঝে মালয়েশিয়া ত্যাগ করেন দুবাইতে চলে যান তিনি।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর এখন সেদেশে যে শুদ্ধ অভিযান চলছে দূর্নীতিবাজ এবং আদম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতেই দুবাইতে অবস্থান করছেন আমিন এবং মালয়েশিয়ায় আবার না ফেরার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সৌজন্যে- প্রবাসীর দিগন্ত