মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েতে প্রায় ৩ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশায় কর্মরত আছেন। তাদের অনেকেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। কুয়েতে এ রকম প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার বাংলাদেশি পরিবার রয়েছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অনেক দেশে সরকারি বাংলাদেশি স্কুল থাকলেও কুয়েতে নেই। এ কারণে বাংলাদেশি পরিবারগুলো সুখ ও উন্নত জীবনের আশায় কুয়েতে এসে সন্তানদের পড়ালেখা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
দেশটিতে ভারত, পাকিস্তান, মিশর, ফিলিপাইনসহ অনেক দেশের একাধিক স্কুল রয়েছে। নিজ দেশের স্কুল না থাকায় বাংলাদেশি ছেলে-মেয়েরা তাই এসব স্কুলে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশি ছেলে-মেয়েরা নিজ দেশের ভাষা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি জানে না। মাতৃভাষা না জানার কারণে তারা কথা বলে হিন্দি, উর্দু ও ইংরেজিতে।
এছাড়া এসব স্কুলে পড়ালেখার খরচ বহন করতে অনেক পরিবারকে হিমশিম খেতে হচেছ। কারণ আয়ের সঙ্গে খরচের ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলেছে। নার্সারি, ক্লাস ওয়ানের শিক্ষার্থীদের বছরে ১ হাজার দিনারের মত খরচ হয় (বাংলাদেশি প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা)। প্রায় প্রতিটি পরিবারের ২/৩ জন সন্তান স্কুল-মাদরাসায় পড়ে। ফলে প্রবাসী আয়ের বড় একটা অংশ চলে যাচেছ অন্য দেশে, আর কমে যাচ্ছে দেশের রেমিট্যান্স।
কুয়েত প্রবাসী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘অন্য দেশের স্কুলে পড়ার কারণে আমাদের সন্তানরা ঠিকমত বাংলায় কথা বলতে পারে না। পড়ালেখার খরচ অনেক। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি কুয়েতে যেন সরকারিভাবে একটি বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।’
এ বিষয়ে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম বলেন, কুয়েতে একটি বাংলাদেশি স্কুল অত্যন্ত প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আগামী বছরের মধ্যে স্কুল চালু করতে পারব। বাংলাদেশি ছেলে-মেয়েরা দেশি কারুকলামে পড়ালেখা করা সুযোগ পাবে।’ তিনি এ জন্য সবার সহযোগিতা কামনাসহ সরকারের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেন।