রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হাসানের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে নির্দেশে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ টাকা জমা দিতে হবে।
আর এ টাকা রাজীবের খালা জাহানারা বেগম ও তাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হবে। মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের মূল শাখায় ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি খোলার নির্দেশ দেন আদালত।
আদেশে আরও বলা হয়, ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করে ২৫ জুনের মধ্যে এ সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।
২৫ জুন মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে ওইদিন ক্ষতিপূরণের বাকি ৫০ শতাংশ টাকা কীভাবে দিতে হবে তার বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত। গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সরকারি পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি ও বেসরকারি স্বজন পরিবহনের চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর শিকার হন রাজীব।
দুই বাসের চাপে হাত কাটা পড়ে রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে বেসরকারি শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক ও বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
কিন্তু ১৬ এপ্রিল রাজীব মারা যান। এ অবস্থায় সোমবার এ তথ্য আদালতকে অবহিত করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর পর রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন।
ছোট দুই ভাই মেহেদি ও আবদুল্লাহ তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় সপ্তম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। সংসারে একমাত্র অভিভাবক বড় ভাই রাজীবের মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পড়েন দুই এতিম ভাই।