ইসরাইল কয়েকটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর বৈরী প্রতিবেশীগুলোর মোকাবেলায় শক্ত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। কিন্তু ইরান এখন ইসরাইলের চোখে নিরাপত্তার জন্য নিকটতম বিপদে পরিণত হয়েছে। ইসরাইল বলেছে- যদি রাশিয়া ইসরাইলের শত্রুদের সাহায্য না করে, ইসরাইলও রাশিয়ার শত্রুদের সাহায্য করবে না।
ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং এই ক্ষেপণাস্ত্র দেশটির অন্যতম প্রতিরক্ষা বুহ্য। ইরান প্রতিরক্ষা শিল্পে আত্মনির্ভরশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। সামরিক বিবেচনায় ইরান হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের একক বৃহৎ শক্তি। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে অত্যন্ত দ্রুতগতির যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে। এসব যুদ্ধজাহাজ ঘণ্টায় ৮০ নটিক্যাল মাইল বা প্রায় দেড়শ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে বলে জানিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী।
ইরান বর্তমানে তাদের আকাশ পথে অত্যাধুনিক কিছু যুদ্ধবিমানের সংযোগ ঘটিয়েছে। ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানের দু’টি সামরিক বাহিনী রয়েছে। এর একটি নিয়মিত বাহিনী অপরটি বিশেষ বিপ্লবী গার্ড সেনা, যার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি।
ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ড বাহিনী বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। এই গার্ড সেনারা বেশি শক্তিশালী এবং সুসজ্জিত। এই বাহিনীকে সময়ের চাহিদায় আধুনিক করে গড়ে তোলা হয়েছে। ইরানের রয়েছে বিশেষ কুর্দি বাহিনী ও নেভাল বাহিনী, যারা গেরিলা যুদ্ধ করতে সক্ষম।
অপর দিকে, ইসরাইলের গোপন পরমাণু কর্মসূচি মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরান ইস্যুতে সৌদি-ইসরাইল গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের রেকর্ড রয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সামরিক ও সাইবার শক্তির সরাসরি সহায়তা পাচ্ছে সৌদি আরব। ইসরাইল নিজেকে সুন্নি মুসলিমদের বন্ধু বলে প্রচার করছে।
দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো যুদ্ধ হয়নি।। জিও পলিটিক্যাল ফিউচারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইল শেষ পর্যন্ত অন্য দেশের স্বার্থে ইরানের সাথে সঙ্ঘাতে জড়াবে না। ইসরাইল সবসময় এক ঝুড়িতে ডিম রাখার নীতি অনুসরণ করে না।’ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুদ্ধ-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে নানা ধরনের বিভাজনের সুযোগে এক ধরনের ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে ইসরাইল।
দুই দেশেরই আছে দূরপাল্লার যুদ্ধবিমান, যুদ্ধাস্ত্র, সাবমেরিন, নৌ বাহিনীর ছোট যুদ্ধবিমান এবং শক্তিশালী সব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। স্থল যুদ্ধ ও পরিবহনের জন্য ইরানি বাহিনীতে আছে আধুনিক যুদ্ধ হেলিকপ্টার। ২০১০ সালের পর ইরান ও ইসরাইল উভয় অনেক মারাত্মক সব অস্ত্র নির্মাণ ও ক্রয় করেছে। ইরান ড্রোন বিমান তৈরি করেছে, নতুন নতুন যুদ্ধ জাহাজের প্রবেশ ঘটিয়েছে।
ইরানের রয়েছে নতুন যোগাযোগব্যবস্থা, ভিন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্থা, শক্তিশালী রাডার ব্যবস্থা, নতুন স্যাটেলাইট ব্যবস্থা, মনুষ্যহীন আকাশ যান বা ড্রোন। সমর বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানের কাছে রয়েছে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও সবচেয়ে বড় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সংগ্রহ।