বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘প্যারালাইজড’ হওয়ার আশঙ্কা করছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক নিউরো সার্জন ওয়াহিদুর রহমান।
শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন আশঙ্কার কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, নার্ভ চাপা পরার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ডান হাতের চেয়ে বাম হাত বেশি দুর্বল। এ অবস্থায় তার শরীর আরও খারাপ হয়ে প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ওয়াহিদুর রহমান বলেছেন, ওনার এখন বেশি সমস্যা ঘাড়ে। ঘাড়ের হাড়গুলো ক্ষয় হয়ে নার্ভ চাপা পড়ে গেছে। ডান হাতে যত শক্তি পাচ্ছেন বাঁ হাতে পাচ্ছেন না। তাই বাঁ হাতে কিছু ধরলে তা পড়ে যাচ্ছে। তবে খালেদা জিয়ার মানসিক জোর অনেক বেশি বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার হাতের আঙুল ফুলে গেছে। কোমরের হাড় ক্ষয় হয়ে সরু হয়ে গেছে। তাই তিনি হাঁটতে পারছেন না।
আরেক চিকিৎসক সিরাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, যতটুকু শুনেছি, ওনার হাত বাঁকা হয়ে গেছে। সমস্ত কাজ করতে পারছেন না। ওনার হাঁটুর যে অবস্থা, চলাফেরা করতে পারছেন না। হাঁটুর অবস্থা করুণ।
খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি দরকার উল্লেখ করে সিরাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকিৎসা করতে হলে ভালো পরিবেশ দরকার। ওনার জীবনী শক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসক আবদুল কুদ্দুছ বলেন, ওনার অসুখগুলো আগে থেকেই ছিল। চোখের কর্নিয়া ড্রাই হয়ে গেছে। দ্রুত চিকিৎসা না হলে অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। ওয়ান স্টপ সার্ভিস যেখানে দেয়া যায়, সেখানে তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সংকটময় বলে দাবি করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সবাই তাকে (খালেদা) বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করার পরামর্শ দিয়েছেন। তার দুটি হাঁটু প্রতিস্থাপন করা আছে। এসব যন্ত্রপাতি ইউনাইটেড ও অ্যাপোলোতে আছে। তাই আমরা বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালের কথা বলছি।
খালেদা জিয়াকে আটকে রাখতে সরকার নীল নকশা করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে সব দায়দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। দেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আতাউর রহমান ঢালী, জয়নুল আবদীন ফারুক, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জারিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। প্রথম শ্রেণীর কারাবন্দি হিসেবে বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
কারাবন্দির পর থেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা। সুত্রঃ যুগান্তর