Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

moon-kimআর মাত্র কয়েকদিন পরেই উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বহুল কাক্সিক্ষত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঐতিহাসিক বৈঠকে সংলাপে বসবেন উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ও দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন।

এ দুই নেতার সংলাপের দিকে চেয়ে আশায় বুক বেঁধে আছেন দেশ দুটির হাজার হাজার অধিবাসী। তারা অপেক্ষায় রয়েছেন দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার।

chardike-ad

কেননা শুধু সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেই ১৯৫৩ সালে শেষ হওয়া কোরীয় যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিভক্ত হয়ে যাওয়া দুই কোরিয়ার অসংখ্য মানুষ আবার তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন। এর জন্য প্রস্তুতিও নেয়া শুরু করেছেন দেশ দুটির সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত অধিবাসীরা।

এতদিন উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করে যে লাউড স্পিকার বা মাইক বাজানো হতো ইতিমধ্যে তা বন্ধ করে দিয়েছেন দক্ষিণের বাসিন্দারা।

সোমবার সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি মাসের ২৭ তারিখ বৈঠকে মিলিত হতে সম্মত হয়েছেন দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতা। এদিন দুই দেশের সীমান্তবর্তী যুদ্ধমুক্ত গ্রাম পানমুনজমে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

পানমুনজম হচ্ছে সেই ঐতিহাসিক গ্রাম যেখানে ১৯৫৩ সালে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে যুদ্ধ কার্যত থেমে যায়। তবে ৩৮ ডিগ্রি অক্ষরেখা বরাবর যে সীমানা টানা হয়, তা দুই অংশের মানুষকে, তাদের নাড়ির সম্পর্ককে ছিন্ন করে ফেলে।

বহুদিন ধরে তারা তাদের স্বজনদের দেখেনি, তাদের কণ্ঠ শুনতে পায়নি। ভালোবাসার মানুষদের বুকে টেনে নিতে পারেনি। তাদের অনেকেই আজ মারা গেছে। আবার অনেকেই বেঁচে আছে। যারা বেঁচে আছে, তাদের বয়স আশি-নব্বইয়ের কোঠায়।

তাদের সময় দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাদের একমাত্র ভরসা কিম-মুনের বৈঠক-সংলাপ। একটি ইতিবাচক সংলাপ দুই কোরিয়ার বহুদিন ধরে আলাদা পরিবারগুলোকে আবার একত্রিত করবে।

১৯৫০ সালে যখন যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে তখন ১৯ বছরের যুবক কিওন মুন কুক। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন তিনি। পক্ষ ত্যাগ করে তিনি দক্ষিণে পালিয়ে যান। নির্মম যুদ্ধ তাকে তার বাবা-মা ও দুই ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলে।

১৯৫৩ সালে যুদ্ধ শেষ হলেও আজও পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়নি তার। এখন ৮৭ বছরের থুরথুরে বৃদ্ধ কিওন। পরিবারের অবশিষ্ট মানুষগুলোকে শেষবারের জন্য দেখার আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তিনি। কিওনের মতো প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৪৭ জন নিবন্ধিত কোরীয় রয়েছে।

এদিকে দুই নেতার বৈঠককে সামনে রেখে যে লাউড স্পিকারের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াকে লক্ষ্য করে প্রচারণা চালানো হতো তা বন্ধ করে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত এলাকায় কয়েক ডজন লাউড স্পিকার বসানো আছে।

এসব লাউড স্পিকার দিয়ে পপ মিউজিক থেকে শুরু করে উত্তর কোরিয়ার সমালোচনামূলক খবর প্রচার করা হয়। এসব প্রচারণা উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে থাকা সেনারা ছাড়াও ওই এলাকার বেসামরিক নাগরিকরা শুনতে পান। উত্তর কোরিয়াও একই রকমের লাউড স্পিকার ব্যবহার করে থাকে। তারা মূলত সিউল ও তাদের মিত্রদের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রচার করে।