মুসলমানদের দ্বিতীয় কেবলা পবিত্র জেরুজালেমকে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মহান দ্বিতীয় সাইরাস বলে মনে করে ইহুদিবাদীরা।
সাইরাইস ছিলেন ইরানের জাতীয় নায়ক। তিনি ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তার সময়েই সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীর জন্য মানবাধিকার ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় সাইরাসের সঙ্গে ট্রাম্পকে ইহুদিবাদীদের তুলনা পরিহাস ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ইহুদি রাষ্ট্রটির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ট্রাম্পকে মহান সাইরাসের সঙ্গে তুলনা করা শুরু করে দিয়েছেন বলে ইয়াহু নিউজ জানিয়েছে।
ট্রাম্পকে সাইরাসের সঙ্গে প্রথম তুলনা করেন অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গত মাসে তিনি যখন ওয়াশিংটন সফর করেন, তখন তিনি বলেন, আমি আপনাকে বলতে চাই, ইহুদিদের মনে রাখার মতো দীর্ঘ ইতিহাস আছে। কাজেই আমরা মহান সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেটের সেই ঘোষণা মনে করতে চাই। হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহু বলেন, সাইরাসের ঘোষণা মনে করার অন্যতম কারণ হচ্ছে, কয়েক সপ্তাহ আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোটের অনেক মন্ত্রীই ট্রাম্পকে সাইরাসের সঙ্গে তুলনা করেন। ইসরাইলের শিক্ষামন্ত্রী নাফটালি বেনেট বলেন, ট্রাম্প তার প্রজন্মের মহান সাইরাস।
ট্রাম্পকে সাইরাসের সঙ্গে তুলনা করার পেছনে একটি গোপন অভিসন্ধী রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাইবেলের বিভিন্ন বইয়ে সাইরাসের কথা উল্লেখ রয়েছে। বাইবেলের বর্ণনা অনুসারে বেবিলনের সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচাদনিজার প্রাচীন জুদাহ সম্রাজ্যে হামলা চালিয়ে সলোমন গির্জা ধ্বংস করে দেন। খ্রিস্টপূর্ব ছয় শতকে জুদ্দাহ থেকে তিনি সব ইহুদিকে বের করে দিয়ে বেবিলনে নির্বাসনে পাঠান। ওই সময়টাকে বেবিলনীয় বন্দিদশা কিংবা দাসত্ব বলে আখ্যায়িত করা হয়।
এ ঘটনার ৭০ বছর পর সাইরাসের নেতৃত্বাধীন পারস্য বেবিলন জয় করে ইহুদিদের তাদের নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দেন। তারা তাদের গির্জা পুর্নির্মাণ করেন। রোমানরা ধ্বংস করার আগে ওই গির্জা প্রায় পাঁচশ বছর টিকে ছিল। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে মহান করার চেয়েও বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছেন যে, জেরুজালেমের সঙ্গে তাদের সহস্রবছর আগের সম্পর্ক রয়েছে।
অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আগামী ১৪ মে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খোলার কথা রয়েছে। ইহুদির সঙ্গে ৭০ সংখ্যাটা এক অদ্ভুত মিল আছে। কারণ নেবুচাদনিজার নির্বাসনে পাঠানোর পর তারা বেবিলনে প্রায় ৭০ বছর বন্দি ছিলেন।