দেশে এখন একদলীয় শাসন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, সর্বত্র দলীয়করণ, লুটপাট। ব্যাংকে টাকা নাই, লুটপাট হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারে লুটপাট। নির্বাহী বিভাগ কারো কথা শোনে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা ছাড়া কেউ কাজ করে না। ফাইল নড়ে না।
রবিবার দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদ আরও বলেন, একদলীয় শাসন চাই না, জনগণের শাসন চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না-আমরাই ক্ষমতায় যাবো। দুঃশাসনের বেড়াজাল ভেঙে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবো। এবার সে সুযোগ এসেছে বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
আরও বলেন, দেশের মানুষ অশান্তিতে আছে, অস্থিরতার মধ্যে বাস করছে। মানুষের শ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ মুক্তি চায়। মানুষ পরিবর্তন চায়। বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তা এখন শূন্য। মানুষ জাতীয় পার্টির জন্য প্রস্তুত। পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। বিএনপি না আসলেও আমরা নির্বাচন করবো।
এরশাদ বলেন, রংপুর ছিল জাতীয় পার্টির দুর্গ। এখন নাই। আসন কমে গেছে। সে আসন ফিরিয়ে আনতে হবে। সামনে নির্বাচন। এ নির্বাচন বাঁচা-মরার নির্বাচন। এ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচত করতে হবে। ২২টি আসন পেলে আমরা ক্ষমতায় যাবো।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, ৯৬ সালে আমাদের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে। আমার দল ভেঙেছে। আর বিএনপির সরকারের শাসনামলে আমাকে নির্বাচন করতে দেওয়া হয় না। আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় নাই। আমাকে ইফতার করতে দেওয়া হয় নাই। আল্লাহর রহমতে জনগণের ভালোবাসায় আমি বেঁচে আছি, ভালো আছি।
নিজের শাসনামলে মানুষ নিরাপদে ছিল দাবি করে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, খুন হতো না। আর এখন খুনের মহোৎসব চলছে। নারী ও শিশু ধর্ষণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এতে করে আমরা সবাই ধর্ষিত হচ্ছি। নারী হয়ে জন্ম নেওয়াটাই অভিশাপ।
‘আমার সময়ে ইয়াবা ছিল না, মাদক ছিল না। উন্নয়ন ছিল। এখন চায়ের দোকানেও মাদক পাওয়া যায়। মাদক তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’
বক্তব্য শেষে এরশাদ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের মিঠাপুকুর উপজেলা সভাপতি এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরের নাম ঘোষণা করেন।
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গার সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব সাংসদ এবি এম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ, মেজর(অব.) খালেদ আখতার, রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস এ ইয়াসিরসহ উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য দেন।