এ যেন অসাধ্য সাধন, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আফগানদের। এটা শুধু জয় নয়, এটা ছিল আফগানিস্তানের বিশ্বকাপের টিকিট। আর সেটা পেয়েও গেল। জিম্বাবুয়ে স্বপ্নভঙ্গ কালই হয়েছিল, তবুও অপেক্ষায় ছিল যদি ম্যাচটা টাই হয়! সেটি হয়নি, ৩৬ বছর পর জিম্বাবুয়েকে ছাড়া হতে যাচ্ছে আগামী ক্রিকেট বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ—হারারেতে ম্যাচটা কী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। বিশ্বকাপের ১০ দলের ৯টি চূড়ান্ত। বাকি একটি দলের নাম জানতে এ ম্যাচের দিকে চোখ রেখেছিল সবাই। অবশেষ প্রশ্নের উত্তরটা জানা গেল, আয়ারল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ নিশ্চিত আফগানিস্তানের।
বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে স্নায়ুচাপের বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে দুই দলকে। তবে সেই পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত উত্তীর্ণ আফগানরাই। ৩৬ বলে আফগানিস্তানের দরকার ছিল ৪৩ রান। ৪৫তম ওভারে ১৫ রান তুলে ফেলায় সমীকরণটা নেমে আসে ৩০ বলে ২৮। পরের ওভারে ৮ রান তুলে ম্যাচটা আরেকটু নিজেদের দিকে টেনে আনেন স্টানিকজাই-জাদরান। পরে সেটি আর হাতছাড়া হয়নি আফগানদের। ১৮ বলে ১৬, ১২ বলে ৭—৫ বল বাকি থাকতে সমীকরণ মিলিয়েই ফেলে আফগানিস্তান।যেন
২১০ রান তাড়া করতে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন দুই আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও গুলবাদিন নায়েব। উদ্বোধনী জুটি ১৬.২ ওভারে ৮৬ রান যোগ করার পরও আফগানিস্তানকে স্বচ্ছন্দে এগোতে দেননি আইরিশ বোলাররা। ৫৯ রানের মধ্যে আফগানিস্তানের ৪ উইকেট ফেলে নিজেদের আশাটাও জাগিয়ে তোলেন। সামিউল্লাহ শেনওয়ারি-আসগার স্টানিকজাই পঞ্চম উইকেট ৩৬ রানের জুটি আফগানদের ম্যাচে ফেরালেও তাদের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে স্টানিকজাই-জাদরানের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে তোলা ৩২ রান।
আফগানিস্তানের মতো আয়ারল্যান্ডকেও ভালো শুরু এনে দেন তাদের দুই ওপেনার পোর্টারফিল্ড-স্টার্লিং। ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটির পর আরেকটি পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়নি আইরিশদের। ওপেনার স্টার্লিংয়ের মতো ফিফটি পেরোনো ইনিংস খেলতে পারেননি আর কোনো আইরিশ ব্যাটসম্যান। স্কোরটা তাই খুব একটা বড়ও হয়নি তাঁদের। ৭ উইকেটে ২০৯ রানের পুঁজি নিয়ে আফগানদের হারানো যাবে না, সেটি তো আয়ারল্যান্ড পরে টেরই পেল।
বাছাইপর্ব যেভাবে জমে উঠল এবার, জয়পরাজয় ছাপিয়ে একটা আফসোসও যেন তৈরি হলো—বিশ্বকাপটা কেন শুধু দশ দলের?