সকল বৈরিতা ভুলে ঐক্যের পথে এগুচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। হয়তো কোরীয় উপদ্বীপে বিভক্তির বিপরীতে লেখা হতে পারে ‘এক কোরিয়া’র নতুন ইতিহাস। এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। পিয়ংইয়ংয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ প্রতিনিধির সাথে বৈঠকের পর উত্তর কোরীয় নেতার এমন ইঙ্গিত নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আগামী মাসে দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে কি ঘোষণা আসবে সেদিকে নজর এখন বিশ্ববাসীর।
জাপানি উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে ভিন্ন দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত হয় কোরীয় উপদ্বীপ। সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় প্রভাবিত হয়ে জন্ম হয় উত্তর কোরিয়ার, আর মধ্যমপন্থী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয় দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ১৯৫০ সালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইল সাংয়ের সিউল আক্রমণের মধ্য দিয়ে চির-বৈরিতার সৃষ্টি হয় দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে। ১৯৫৩ সালে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি ও বেসামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে অবসান হয় কোরিয়া যুদ্ধের।
পরবর্তীতে উত্তরের পরমাণু সক্ষমতা বাড়ানোয় জোর দেওয়া ও নানা বিষয়ে দুই মেরুতেই অবস্থান করেছে পিয়ংইয়ং ও সিউল। তবে বরফ গলতে শুরু করেছে সম্প্রতি। ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তরের অংশগ্রহণের পর বদলেছে সমীকরণ। চলতি মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের পিয়ংইয়ং সফর সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন দ্বার উন্মোচন করে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক শেষে দুই কোরিয়ার পুনঃ একত্রীকরণে নতুন ইতিহাস তৈরির কথা বলেন উত্তর কোরীয় তো কিম জং উন।
নিরাপত্তা সুরক্ষার নিশ্চয়তার শর্তে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রাখতেও সম্মত উত্তর কোরিয়া। ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মত আগামী এপ্রিলে বৈঠকে বসবেন দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা।
বিশ্লেষকদের মতে, কোরীয় উপদ্বীপের শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে দুই দেশ পারস্পরিক সমস্যার সমাধান ও সমঝোতায় পৌঁছাতে এসব পদক্ষেপ অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
এদিকে, দুই দেশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ বিশ্ব সম্প্রদায়।
সুত্রঃ বৈশাখী টিভি