Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

china-war-shipদ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরীর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার মাত্র এক বছরের মধ্যে এ যুগের নতুন পরাশক্তি চীন তৃতীয় বিমানবাহী রণতরীর নির্মাণকাজ শুরু করেছে। এর মধ্য দিয়ে চীন সবচেয়ে বড় পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অজেয় নৌশক্তিকে জোরালো চ্যালেঞ্জ জানানোর সক্ষমতা অর্জনের পথে এক কদম এগিয়ে গেল।

চীনা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, নতুন এই বিমানবাহী রণতরীটি হবে নতুন প্রজন্মের সবোর্ত্তম প্রযুক্তির। সেইসঙ্গে সর্বাধুনিক লঞ্চিং সিস্টেম, সর্বাধুনিক মারণাস্ত্র ও যন্ত্রপাতিসজ্জিত।

chardike-ad

চীনের প্রথম বিমানবাহী রণতরীটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ইউক্রেনের ভাগে পাওয়া অসমাপ্ত একটি রণতরী। যা পরে চীন ক্যাসিনো বানাবার কথা বলে ২০ লাখ ডলার দিয়ে কিনে নেয়। পরে এটির বাকি কাজ সমাপ্ত করে চীনা নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে।

এরপর সম্পূর্ণ দেশীয় প্রকৌশলকে কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী নির্মাণে সফলতা দেখায় বেইজিং। দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরীটিকে টাইপ০০৩ রণতরী হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতেই সকল ট্রায়াল শেষে এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনা নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত (কমিশনিং) করা হবে।

আর তৃতীয় বিমানবাহী রণতরীটিকে টাইপ০০৩ রণতরী হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এটি হবে আগের দুটির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা এক বিমানবাহী রণতরী। এর নকশা, এর উড্ডয়ন ব্যবস্থা, এর অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি হবে হালফিল প্রযুক্তির। সে কারণে এটির নির্মাণ একইসঙ্গে বিশাল জটিল আর চ্যালেঞ্জিং এক কর্মযজ্ঞ।

চীনের সাংহাই জিয়াংনান শিপইয়ার্ডে এটির নির্মাণকাজ অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বলে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টসহ বেশক’টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

তারা বলেছে, নতুন এই সুবিশাল রণতরীর (টাইপ ০০৩) বদৌলতে চীনের নৌ-উড্ডয়ন ব্যবস্থার পরিসীমা ও সক্ষমতা অনেকদূর এগিয়ে যাবে।

বিশাল আকারের কারণে বিমানবাহী রণতরীকে ‘ভাসমান শহর’ বা ‘ভাসমান বিমানবন্দর’ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এদিক থেকে প্রতিটি বিমানবাহী রণতরী একেকটি মহাতরী। এমন জটিল ও বিপুলায়তন রণতরী নির্মাণে স্বাভাবিকভাবেই ৫ থেকে ১০ বছর লেগে যায়। কিন্তু চীনের তৃতীয় রণতরীর নির্মাণকাজ এমন অবিশ্বাস্য দ্রুতগতি এগোচ্ছে যে, মাত্র ২ বছরেই এর কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই রণতরীতে চীন পুরনো আমলের স্কি-জাম্প ও ক্যাটাপাল্ট ব্যবস্থা বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক লঞ্চিং ব্যবস্থা চালু করবে। যুক্তরাষ্ট ছাড়া আর কোনো দেশেরই, এমনকি রাশিয়ারও, এই প্রয়ুক্তি আয়ত্তে নেই। তবে বহু বছর ধরে চেষ্টা চালিয়েও এই ব্যবস্থাটির প্রয়োগে ১০০ সফলতা অর্জন করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট।

প্রসঙ্গত, চীন এখন যুক্তরাষ্ট ও রাশিয়ার সমকক্ষ এক ব্লু-ওয়াটার নেভি বা বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারে সক্ষম এক নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। তিন তিনটি রণতরীর মালিকানা এই লক্ষ্য পূরণের পথে চীনকে অনেক দূর এগিয়ে দেবে।

আগামী ২০২৩০ সালের মধ্যে চীন ৪র্থ বিমানবাহী রণতরী তথা চার চারটি নৌবহরের (এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার ব্যাটল গ্রুপ) মালিক হতে চায়। সে ধরনের সামরিক, অর্থনৈতিক ও প্রাযুক্তিক সক্ষমতা এ মুহূর্তে চীনের রয়েছে।