বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর বৃহৎ একটি অংশ প্রবাসে জীবিকার তাগিদে ক্লান্ত। পুরনো বছরের গ্লানি টেনে নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন তারা। বিদেশের মাটিতে প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকতে হচ্ছে এসব প্রবাসীদের। প্রত্যাশা ও জীবন সংগ্রামের চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন বছরের যাত্রা শুরু হলো মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে বছরজুড়ে ছিল আলোচনা সমালোচনার ঝড়। গেলো বছর রি-হিয়ারিংয়ের আওতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার কর্মী ভিসা পেয়েছেন এবং নিবন্ধিত প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার শ্রমিকের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দেশটির অভিবাসন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া নাম ও বয়স জটিলতার কারণে কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। ওইসব কর্মীর জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন না-কি দেশে ফিরতে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
এদিকে অবৈধ প্রবাসীদের নির্ধারিত সময়ে যারা রেজিস্ট্রেশন করে নিবন্ধনের আওতায় আসতে পারেননি তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। এ প্রক্রিয়ায় কতজন বাদ পড়েছেন তার হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি।
এদিকে নতুন বছরের শুরুতে অবৈধদের গ্রেফতারে বড় ধরনের সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণা দিয়েছিল দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। বছরের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো অভিযানে বা বিদেশি কর্মী গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আতংকে রয়েছেন অনেকে।
এর মধ্যে কেউ গ্রেফতার হলে দেশটির অভিবাসন আইন অনুযায়ী, ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর ধারা ৫৫-বি এর অধীনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার রিঙ্গিত জরিমানা বা ১২ মাস পর্যন্ত জেল অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক কর্মী বৈধ হওয়ার জন্য কোম্পানি মারফত এবং কোম্পানি ছাড়া কয়েকটি এজেন্টের কাছে টাকা পয়সা ও পাসপোর্ট দেয়ার পরেও তারা বৈধ হতে পারেননি। এসব কোম্পানি ও এজেন্ট সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে শিগগিরই মাঠে নামবে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।
ক্লাং মেরু থেকে জয়নাল আবেদিন নামে এক বাংলাদেশি বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, বৈধ হওয়ার জন্য এক বছর আগে বাংলাদেশি দালালের কাছে টাকা পাসপোর্ট দিয়েছিলাম তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জয়নাল কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। শুধু জয়নালই নয় এ রকম শত শত জয়নাল বৈধতা নেয়ার নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।