Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

khaierচলতি বছর পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফেরার প্রাক্কালে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জেদ্দা বিমানবন্দরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে করুণ মৃত্যু হয় বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা আবুল খায়ের মজুমদার।

প্রচলিত নিয়মে সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে কোনো হাজির মৃত্যু হলে দেশে ফিরিয়ে আনার নিয়ম নেই। নিয়ম মেনে কোনো পরিবার মৃতের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতেও চান না। সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায় পবিত্র ভূমিতেই মৃত সব বাংলাদেশিকে দাফন করা হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম আবুল খায়ের মজুমদারের পরিবার। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর বাবার লাশটি যেকোনো মূল্যে দেশে ফিরিয়ে আনতে আবুল খায়েরের একমাত্র মেয়ে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন।

chardike-ad

মর্মস্পর্শী আবেদনপত্রে মেয়ে লিখেছিল ‘যতদিন লাগে অপেক্ষা করব, যত টাকা লাগে খরচ করব তবুও বাবার লাশটা ফেরত চাই।’

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় তিনমাস চিঠি চালাচালির পর সেই মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে আবুল খায়ের মজুমদারের লাশ ঢাকায় এসেছে। তার এক আত্মীয় লাশটি বিমান কার্গো থেকে গ্রহণ করে উত্তরার বাসায় নিয়ে যান। এ সময় দীর্ঘ তিনমাস অপেক্ষার পর কফিনে বাবার লাশ দেখে একমাত্র মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আজ বাদ আসর উত্তরায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল শনিবার ফেনীতে গ্রামের বাড়িতে তার দাফনের কথা রয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন এ সব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি গত নয় বছর ধরে হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এ সময়ের মধ্যে সৌদিতে হজ করতে গিয়ে মৃত কোনো হাজির লাশ দেশে আনা হয়েছে এমনটি দেখেননি। এটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, মৃত হাজি আবুল খায়ের মজুমদারের মেয়ে ও স্ত্রী গত তিনটি মাস ধরে লাশটি ফিরে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। কিছুদিন পর পর যোগাযোগ করে লাশ কবে নাগাদ আসবে সে সম্পর্কে অগ্রগতি জানতে চান। তাদের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মক্কায় হজ অফিস ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহায়তায় আজ লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

চলতি বছর জেদ্দা এয়ারপোর্টে মৌসুমী হজ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আনোয়ার হোসেইন। তিনি জানান, আবুল খায়ের মজুমদার মারা যাওয়ার পর তার মূল্যবান মালামাল জেদ্দায় তাদের জিম্মায় রাখা হয়। মৃত মজুমদার একমাত্র মেয়ের জন্য স্বর্ণের নাকফুল, কানের দুল ও লকেটসহ চেইন কিনেছিলেন। তিনি দেশে ফিরে সেগুলো পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেন।