বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সোহেল আহমেদ (ছদ্মনাম) গত ৫ ডিসেম্বর পরিবারসহ ছুটি কাটাতে রওয়ানা হন মালয়েশিয়া। বেসরকারি এক এয়ারলাইন্সে মধ্য রাতে পৌছেন কুয়ালালামপুর আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে। বেশ খুশি মনে প্লেন থেকে নামেন। কিন্তু এয়ারপোর্টে নামতেই দেখেন ফ্লাইটে আসা সকল যাত্রীর পাসপোর্ট কেড়ে নিচ্ছেন দুজন ইমিগ্রেশন অফিসার।
এই ভিড় পেরিয়ে ৪ বছরের সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান সোহেল। বাধ সাধেন ইমিগ্রেশন অফিসাররা। ইমিগ্রেশন কাউন্টারের আগেই কেন পাসপোর্ট নিচ্ছেন জানতে চাইলে ধমক দিয়ে তাকে লাইনে দাঁড়াতে বলেন।
সোহেল বলেন, নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছিল। ঠিক যেন অপরাধী ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাদেরকে লাইন ধরে হাঁটতে বলেন এবং একটু পর পর ধমক দিয়ে লাইন ভাঙ্গতে নিষেধ করতে থাকেন। আমাদের ইমিগ্রেশন ডেস্কে না নিয়ে অফিসের সামনে নিয়ে লাইন ধরানো হয়। এরও প্রায় ১ ঘণ্টা পর একজন একজন করে ভেতর থেকে ডাকা হতে থাকে। এর মধ্যেই কয়েকজন ইমিগ্রেশন পুলিশ এসে ধমক দিয়ে ফ্লোরেই বসতে বলেন। যেন চোরদের ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে গণ্য করছিল না আমাদের। আমাদের ডাক পড়লে রিটার্ন টিকিট চেক করে, হোটেল বুকিং আর ডলার চেক করে মালয়েশিয়ায় ঢোকার অনুমতি মেলে। আমার ছোট সন্তান ক্ষুধার জ্বালায় কান্না শুরু করেছিল।
এই তো গেলো সোহেল আহমেদের কথা। যাকে ইমিগ্রেশন ছেড়ে দেয়। আরেকজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী রুহুল আমিনও (ছদ্মনাম) গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। তাকে কিন্তু ইমিগ্রেশন অফিস থেকে ছাড়া হলো না। সব মিলিয়ে ওই ফ্লাইটের আরো ৭ বা ৮ জনের সঙ্গে তাকেও নিয়ে যাওয়া হলো অন্য একটি রুমে। বলা হলো সেখানে অপেক্ষা করতে।
রুহুল বলেন, ওই রুমে বেশিরভাগই বাংলাদেশি। কেউ ফ্লোরে বসে আছেন, কেউ চেয়ারে। সারা রাতের ভ্রমণ আর ইমিগ্রেশন অফিসের জেরায় যখন শরীর ক্লান্ত ততক্ষণে বোঝা হয়ে গেছে আমাকে আর মালয়েশিয়া ঢুকতে দেয়া হচ্ছে