ব্রিটেনের অক্সফোর্ড শহরের নগর কাউন্সিল মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে দেয়া সম্মান প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
অক্টোবরে তার এ খেতাব প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেয় কাউন্সিল।
নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি যে আচরণ করছে, তাতে মিজ সু চি আর ‘ফ্রিডম অব দি সিটি’ নামের ওই পুরস্কারের যোগ্য নন।
অক্সফোর্ড শহরের সাথে নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী অং সান সু চির নাম জড়িয়ে আছে, কারণ তিনি সেখানে পড়াশোনা করেছিলেন।
মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতার কারণে কয়েক লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
দেশটিতে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকার সময়ে বছরের পর বছর মিজ সু চি গৃহবন্দী ছিলেন।
তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার থাকতে দেখা গেছে তাকে।
কিন্তু দেশটিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর যে ভাবে নির্যাতন হয়েছে তাতে করে মিজ সু চির ভূমিকায় হতবাক হয়েছেন বিশ্বের অনেক নেতারা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিন্দা জানিয়েছে এই নির্যাতনের।
এদিকে সেন্ট হাগ’স কলেজ যেখানে মিজ সু চি পড়াশোনা করেছিলেন সেখান থেকে তার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
সু চি ‘লজ্জিত’ করেছেন তাই সম্মাননা ফেরত : বব গেলডফ
বিবিসি, ১৪ নভেম্বর ২০১৭
রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্য অং সান সু চির সমালোচনা করে মিয়ানমারের এই নেত্রীর সাথে পাওয়া সম্মাননা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইরিশ সঙ্গীতজ্ঞ ও অধিকারকর্মী বব গেলডফ। গেলডফ ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব ডাবলিন’ ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আয়ারল্যান্ডের নাগরিক গেলডফ বলেছেন, সু চির সাথে আমাদের শহরের সম্পর্ক এখন আমাদের সবার জন্য লজ্জাজনক।
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের কারণে সু চি এরই মধ্যে তাকে নানা সময়ে দেয়া বিভিন্ন সম্মাননা হারিয়েছেন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের জন্য গণতন্ত্রের নেত্রী হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাওয়া সু চির নোবেল পদক ফেরত নেয়ার দাবিও উঠেছে।
আয়ারল্যান্ডের গায়ক-গীতিকার, অভিনেতা গেডলফ রাজনৈতিক আন্দোলনেও সক্রিয়। ২০০৬ সালে ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব ডাবলিন’ সম্মাননা পান তিনি। এই সম্মাননা ২০১২ সালে দেয়া হয় সু চিকে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে এখন সমালোচিত সু চি।
রাখাইন প্রদেশে নির্যাতনের মুখে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা গত আড়াই মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের সুরক্ষার সাথে ফেরত নেয়ার বিষয়েও গড়িমসি দেখাচ্ছে মিয়ানমার। গেলডফ এক বিবৃতিতে সোমবারই ডাবলিনের সিটি হলে গিয়ে তাকে দেয়া সম্মাননা স্মারকটি ফেরত দিয়ে আসার কথা জানান। সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শহরের সাথে তার (সু চি) যে বন্ধন তৈরি হয়েছিল, সেজন্য আজ আমরা প্রত্যেকে লজ্জা বোধ করছি।
‘আমরা এক দিন তাকে সম্মান জানিয়েছিলাম; কিন্তু তিনি এখন আমাদের হতাশ করেছেন, লজ্জিত করেছেন।’ রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমার সরকারের অবস্থানে হতাশা প্রকাশের সাথে তা নিয়ে নিশ্চুপ থাকার জন্য স্টেট কাউন্সেলর সু চির সমালোচনায় মুখর গেলডফ। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা তাকে বলব, রোহিঙ্গারা যে নৃশংসতার মুখোমুখি, তা এখনই বন্ধ করুন।’