রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন কুনিপাড়া এলাকায় একজন ভুয়া ক্যাপ্টেনকে আটক করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। মো. জাহিদ হাসান নামের এই ব্যক্তি নিজেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবীর একজন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুনিপাড়া বাবলী মসজিদ এলাকায় শওকত আলীর বাড়ির পাঁচ তলা থেকে তাকে আটক করেন র্যাব- ১১ এর সদস্যরা। তার কাছ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো প্রতীক সম্বলিত করপোরাল র্যাংক ব্যাজ যুক্ত এক সেট ইউনিফর্ম, এক জোড়া বুট, সেনাবাহিনীর কম্বাইন্ড কাপড়ের তৈরি ব্যাগ ও প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের একটি ভুয়া সনদপত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাব- ১১ এর নারায়ণগঞ্জ, আদমজী সিপিসির ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি অধিনায়ক মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী জানান, জাহিদ হাসান নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণা করছিলেন। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার বাহাদুরপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে।
জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘জাহিদ হাসান ফেসবুকে সেনাবাহিনীতে কর্মরত ক্যাপ্টেন ও করপোরাল পরিচয় দিয়ে দুটি আইডি খুলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তার কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নজরদারী করা হয়। এতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি তার বিয়ের তথ্য গোপন রেখে সেনাবাহিনীতে ২০১৩ সালে যোগ দেন। সেখানে বেসিক ট্রেনিং শেষ করে সাভার সেনানিবাসে কর্মরত অবস্থায় প্রথম স্ত্রীর তথ্য গোপন রেখে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সহকর্মীর সঙ্গে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর তথ্য গোপন রেখে সাভার এলাকায় তৃতীয় বিয়ে করেন। তার তৃতীয় স্ত্রীর ঘরে আট মাসের এক সন্তান রয়েছে।
চাকুরিতে যোগ দেওয়ার আগে বিয়ের তথ্য গোপন রাখা এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া একাধিক বিয়ে করার কারণে তিনি ভীত হয়ে কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যান ও দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকেন। সেনাবাহিনী হতে চাকুরিচ্যুত হওয়ার পর তিনি প্রতারণার উদ্দেশ্যে ফেসবুকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয় দিয়ে র্যাংক-ব্যাজ সম্বলিত ইউনিফর্ম পড়ে বিভিন্ন পোস্ট দিতে শুরু করেন।
তিনি নিজেকে কখনো ক্যাপ্টেন, কখনো সার্জেন্ট, কখনো করপোরাল কিংবা মেডিক্যাল অফিসার, প্রাক্তন র্যাব সদস্য ও সিআইডি সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সেইসাথে ভুয়া প্যারা কমান্ডো সনদপত্র তৈরি করে অবসরপ্রাপ্ত তথ্য দিয়ে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় এসিআই কোম্পানিতে সুপারভাইজার হিসেবে চাকরি নেন। এখানে কর্মরত অবস্থায় ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
সৌজন্যে: রাইজিংবিডি