নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলেক্ষে রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির মহাসমাবেশে দলটির চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি কোনো সংঘাতে যেতে চায় না। সুষ্ঠু রাজনীতি করার মাধ্যমে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চায়। এজন্য সকল দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চায় বিএনপি।
খালেদা জিয়া বলেন, আগামী নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে না হলে সে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে সেটা কখনো সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার (বিচারিক ক্ষমতা) দিতে হবে।’
এসময় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বিচার বলতে কোনো কিছু নেই। বিচার ব্যবস্থাকে সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) তার পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সত্য কথা বলায় তাকে বিদায় নিতে হলো।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে দেশ থেকে সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায়, সেহেতু তারাই এই টাকা পাচার করেছে।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার আগে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। আমি জানতে চাই- ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা বলে এখন কেন ৭০ টাকায় জনগণকে চাল খাওয়ানো হচ্ছে।’
গুম-খুন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের (নেতাকর্মী) নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। তাদেরকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
সরকারি কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব (চাকরিচ্যুত করা) কাজ বিএনপির নয়। সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা দেখা হবে। কারো চাকরি খাওয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলছে- বিএনপি ক্ষমতায় আসলে মানুষ হত্যা করবে। আমরা মানুষ হত্যা করি না, মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ। এটা আওয়ামী লীগের কাজ, বিএনপির নয়।’
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘সমাবেশ যাতে সফল না হয় এজন্য অনেক বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আমিও যাতে আপনাদের সামনে পৌঁছাতে না পারি এজন্য গুলশানে বাস দিয়ে রাস্তা আটকে রাখা হয়।’
‘এই হলো এদের (সরকার) অবস্থা। এরা যে কত ছোট মনের তা প্রমাণ করে দিয়েছে। এতো ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না’ যোগ করেন খালেদা জিয়া।
এর আগে গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হয়ে বিকেল সোয়া ৩টায় মঞ্চে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন। এসময় নেতাকর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
এসময় খালেদা জিয়া দু’হাত নেড়ে তিনি নেতাকর্মীদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। এরপর বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে শুরু করে ৫টা ১০ মিনিটে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।