সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো নারীদের স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার অনুমতিসংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছেন দেশটির বাদশাহ সালমান। দেশটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ সোমবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্বে সৌদি আরবই একমাত্র দেশ, যেখানে নারীদের স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার অনুমতি নেই। কিন্তু এখন তারা সে অনুমতি পেতে যাচ্ছেন।
সূত্রের খবরে বলা হয়েছে, আগামী বছর থেকে সৌদি নারীরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে পারবেন। সৌদি আরবের প্রধান তিন শহর- রিয়াদ, জেদ্দাহ, দাম্মামের নারীরা এ অনুমতি পাচ্ছেন। এটা সৌদি নারীদের আরও একটু স্বাধীনতা পাওয়ার নতুন পদক্ষেপ। এর আগে গাড়ি চালানোর অনুমতি পান সৌদি নারীরা।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রস্তাব করা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নে সৌদি রাজতন্ত্র তাদের আগের করা কঠোর আইনগুলো শিথিলের চেষ্টা করছে; এরই অংশ হিসেবে খেলার মাঠে প্রবেশাধিকার পেতে যাচ্ছেন সে দেশের নারীরা।
দেশটির ‘অভিভাবক ব্যবস্থা’ অনুযায়ী, পরিবারের পুরুষ সদস্য, যেমন- বাবা, ভাই কিংবা স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীরা পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা অন্য কোনও কাজে বাইরে যেতে পারেন না। স্টেডিয়ামে তারা যেতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে যেতে হয়।
সৌদি আরবের স্পোর্টস অথরিটি জানিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে যাতে নারীরাও স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলাধুলা উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য দেশটির প্রধান তিন শহরের স্টেডিয়ামগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষণা দেন, গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার জন্য নারীদের তাদের পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে না। নারীরা তাদের ইচ্ছানুযায়ী যে কোনও জায়গায় গাড়ি চালাতে পারবেন। এ আদেশ ২০১৮ সালের জুন থেকে কার্যকর হবে।
গত বুধবার প্রিন্স মোহাম্মদ ঘোষণা দেন, দেশটির আধুনিকায়নের জন্য তার পরিকল্পনার মূলকথা হলো, ‘মধ্যপন্থী ইসলাম’ ফিরিয়ে আনা।
গত পাঁচ বছরে সৌদি আরবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে অনেক নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাদশাহ আবদুল্লাহ ২০১১ সালে নারীদের শূরা কাউন্সিলে যোগদানের অধিকার দেন। এছাড়া পৌর নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার দেন তিনি। ২০১৫ সাল থেকে নারীরা সেখানে ভোট দিতে পারছেন। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো শূরা কাউন্সিলে নারীদের নিযুক্ত করা হয়।