অস্ট্রেলিয়ায় বহুদিনের বিতর্কিত নাগরিকত্ব প্রদানের প্রস্তাবিত আইন প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সিনেট। বুধবার সংসদের সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে প্রস্তাবিত আইনটির পক্ষে-বিপক্ষে দেশটির সাংসদদের মতামত এবং ক্রস বেঞ্চ ভোট গ্রহণ করার পর প্রস্তাবিত আইনটি বাতিল করে দেয় সিনেট কমিটি।
ফলে আগের আইনের নীতিমালা অনুযায়ী নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য আবেদন করা যাবে। দেশটির বিরোধীদলীয় অভিবাসন ছায়ামন্ত্রী টনি বার্ক তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে এ ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার দল লিবারেল পার্টির অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে এটি একটি বিশাল জয় বলে জানিয়েছেন টনি বার্ক।
গত ২০ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল ঘোষণায় জাতীয় নিরাপত্তাকে কারণ দেখিয়ে একটা বড় পরিবর্তন আনেন অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদানের আইনে। নতুন আইনের সারাংশে ছিল এক বছরের পরিবর্তে চার বছর অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস, সর্বোচ্চ তিনবার নাগরিকত্বের পরীক্ষা দেয়ার সীমাবদ্ধতা ও ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণে আইইএলটিএসে ন্যূনতম ৬ স্কোর করা।
কিন্তু নতুন আইনের প্রস্তাবিত বিল সংসদে উত্থাপন করার পরপরই এর তীব্র বিরোধিতা জানায় দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি ও লাখ লাখ অভিবাসীরা। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বহুজাতিক সংস্কৃতির সংসদীয় কমিটিও আইনটির বিরোধিতা করে। ফলে তাদের বিরোধিতার কারণে নাগরিকত্ব প্রদানের প্রস্তাবিত নতুন বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ক্রস বেঞ্চ ভোট নেয়ার জন্য উচ্চতর কক্ষ সিনেটে পাঠানো হয়। আর সেই ক্রস বেঞ্চ ভোটেই বিলটি সরকারের বিপক্ষে চলে যায়। ফলে সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়েও প্রস্তাবিত এ আইন বাতিল করে দেয় দেশটির সিনেট।
এদিকে সরকারের বিরুদ্ধে এ জয়লাভের ঘটনাকে অস্ট্রেলিয়ার সব অভিবাসীদের জয় হিসেবে দেখছেন টনি বার্ক। অস্ট্রেলিয়ার উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িতদের ম্যালকম টার্নবুলের সরকার নাগরিকত্ব প্রদানে বাধা দিচ্ছিল বলে সিনেটে দেয়া ভাষণে উল্লেখ করেন টনি বার্ক। তবে ভবিষ্যতেও এ সরকার এমনটাই করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে দাবি টনি বার্কের। তাই আগের আইনের আওতায় যারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্য, তাদের দ্রুত আবেদন করার পরামর্শ জানিয়েছেন তিনি। আর অভিবাসন বিভাগকে পূর্বের আইন বহাল রেখেই দ্রুত নাগরিকত্ব প্রদানের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেও আহ্বান জানান টনি বার্ক। জাগো নিউজ