আর্জেন্টিনার বাঁচামরার ম্যাচে জ্বলে উঠলেন লিওনেল মেসি। হ্যাটট্রিক করে জেতালেন শুরুতেই পিছিয়ে পড়া দলকে। সব শঙ্কা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা সরাসরি উঠে গেল রাশিয়া বিশ্বকাপে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের শেষ রাউন্ডে একুয়েডরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ভাগ্য নিজেদের হাতেই রেখেছিল আর্জেন্টিনা। অন্য ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে চিলি হেরে যাওয়ায় আর কলম্বিয়া-পেরু ম্যাচ ড্র হওয়ায় তৃতীয় হয়ে সরাসরিই ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে উঠে গেল হোর্হে সাম্পাওলির দল।
ব্রাজিলের মাটিতে ৩-০ গোলে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপে আর যাওয়া হলো না চিলির। আগেই বিশ্বকাপ প্রায় নিশ্চিত করে রাখা উরুগুয়ে ৪-২ গোলে হারিয়েছে বলিভিয়াকে। পেরুর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে কলম্বিয়া হয়েছে চতুর্থ। পঞ্চম স্থান পাওয়া পেরুকে খেলতে হবে ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে প্লে-অফ।
একুয়েডরের রাজধানী কিটোতে বাঁচামরার ম্যাচের ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে পিছিয়ে পড়েছিল আর্জেন্টিনা। লম্বা বাড়ানো বল ধরে সতীর্থকে হেডে বাড়িয়েছিলেন দিয়েছিলেন রোমারিও ইবাররা। বল ফেরত পেয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই মিডফিল্ডার। বিশ্বকাপ ভাগ্য নিজেদের হাতে রাখতে হলে আর্জেন্টিনার তখন কমপক্ষে দুই গোল করতে হতো।
মেসির নৈপুণ্যে সমতা ফেরাতে দেরি হয়নি আর্জেন্টিনার। দ্বাদশ মিনিটে বাঁয়ে আনহেল দি মারিয়াকে বল বাড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন বার্সেলোনার ফরোয়ার্ড। বল ফেরত পেয়ে প্রথম ছোঁয়াতেই বাঁ পায়ের বুটের সামনের অংশ দিয়ে টোকায় জালে পাঠান তিনি।
আট মিনিট পর একক প্রচেষ্টায় আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি। ডিফেন্ডারদের ভুলে বল পেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও অনেক কিছু করার বাকি ছিল। বল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডি-বক্সে ঢুকে উপরের বাঁ-কোণ দিয়ে জালে পাঠান পাঁচবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির পর শুরুর দিকে বার বার আক্রমণে উঠে অতিথিদের চাপে রেখেছিল একুয়েডর। তবে ৬২তম মিনিটে হ্যাটট্রিক করে যেন সব অনিশ্চয়তার অবসান ঘটালেন মেসি।
বল পেয়েছিলেন প্রায় ৪০ গজ দূরে। সামনে ছিলেন প্রতিপক্ষের তিন খেলোয়াড়। বল নিয়ে এগিয়ে পায়ের জাদু আর ক্ষিপ্রতায় একজনকে ফাঁকি দিলেন। আরেকজন বাধা দিতে এগিয়ে আসতেই লবে একটু এগিয়ে থাকা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠালেন জালে।
অনেকেই বলেছিল এটা হতে যাচ্ছে মেসির শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আর্জেন্টিনা অধিনায়ক জবাবটা তোলা রেখেছিলেন যেন এই ম্যাচের জন্য।
নিজেদের ম্যাচটা জিততে পারলে অন্তত পঞ্চম স্থানে থেকে প্লে-অফ খেলাটা নিশ্চিত ছিল আর্জেন্টিনার। তবে মেসির দুর্দান্ত এই নৈপুণ্যের দিনে আর্জেন্টিনার পক্ষে গেল ব্রাজিল-চিলি আর কলম্বিয়া-পেরু ম্যাচের ফলও। তাই শেষ পর্যন্ত তৃতীয় হয়ে সরাসরিই বিশ্বকাপে গেল শেষবার ১৯৭০ সালের আসরে খেলতে না পারা আর্জেন্টিনা।