দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট মানেই বাংলাদেশের ইনিংস পরাজয় অবধারিত- এটা যেন নিয়তিই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এবার নিয়তির অমোঘ বিধান পাল্টে গেছে। এখন আর ইনিংষ হারের জন্য লড়াই করে না বাংলাদেশ। লড়াই করে জয়ের জন্য। তেমনই আরেকটি লডাই শুরু করতে যাচ্ছে টাইগার ক্রিকেটাররা। পচেফস্ট্রম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ৪২৪ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৯৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গিয়েছিল ৩২০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে লিড পায় ১৭৬ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। সব মিলিয়ে তাদের লিড দাঁড়ায় ৪২৩ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে ৪২৪ রান।
বাংলাদেশের জন্য মুমিনুলই ছিলেন যেন সবচেয়ে বড় ত্রাতা। যে দ্রুত গতিতে রান তুলছিল দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা, তাতে বাধ দেয়ার বড্ড প্রয়োজন ছিল। সে কাজটা অকেশনাল বোলার মুমিনুলই করে দিলেন। বৃষ্টি শুরুর ঠিক আগে ফিরিয়েছিলেন বিপজ্জনক হয়ে ওঠা প্রোটিয়া অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিসকে। বৃষ্টির পর ফেরালেন আরেক বিপজ্জনক টেম্বা ভাবুমা এবং বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কককে। টেম্বা ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে এবং ডি কক আউট হন তার বলে বিভ্রান্ত হয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে।
বৃষ্টির কারণে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর যখন আবার শুরু হলো, তখন বিপজ্জনক হয়ে ওঠা টেম্বা ভাবুমাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন মুমিনুল হক। বাম পাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরলেন লিটন দাস। ৭১ রান করে ফিরে যান ভাবুমা।
কুইন্টন ডি কক বেশ বিধ্বংসী এক ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডের মতই ব্যাটিং করেন টেস্টে। কিন্তু তাকে ঘূর্ণি ফাঁদে ফেলে বিভ্রান্ত করেন মুমিনুল। এ কারণে স্ট্যাম্পিং হয়ে যান ডি কক। আন্দিল পেহলুকাইয়ো ৬ এবং কেশাব মাহারাজ ১৯ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করেন ফ্যাফ ডু প্লেসিস।
এর আগে দ্রুত রান তোলার লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে যাচ্ছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই তারা তুলে ফেলেছে ১৪৯ রান। ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম সেশনে একমাত্র সফল বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। হাশিম আমলার উইকেটটি তুলে নেন তিনি।
৩ উইকেটে ২০৩ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ততক্ষণে তাদের লিড দাঁড়িয়ে যায় ৩৭৯ রান। উইকেটে ছিলেন টেম্বা ভাবুমা এবং অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস। বোঝাই যাচ্ছিল, দ্বিতীয় সেশনে আরও দ্রুত গতিতে রান তুলে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে চায় তারা।
তবে লাঞ্চের পরপরই আনকোরা বোলার মুমিনুল হকের এলবিডব্লিউর শিকার হন অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস। দলীয় ২১২ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৮১ রানে মুমিনুলের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডু প্লেসিস।
ডু প্লেসিস আউট হওয়ার পর মাত্র এক ওভারের খেলা হয়। এরপরই নামে বৃষ্টি। আম্পায়াররা সঙ্গে সঙ্গে খেলা বন্ধ করে দেন এবং ত্রিপল দিয়ে উইকেট ঢেকে দেয়ার নির্দেশ দেন।