দেশে ফেরা প্রবাসীদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভোটার নিবন্ধন, সংশোধন ও হালনাগাদ শেষে স্বল্প সময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য বা অবহেলা সহ্য করা হবে না এবং হয়রানি বা অসদাচরণের প্রমাণ পেলে ‘কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ে পাঠানো কমিশনের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিদেশে ভোটার করার ‘জটিলতার’ মধ্যে দেশে এলে দ্রুত তাদেরকে ভোটার করে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া অথবা এনআইডি সংক্রান্ত যে কোনো সেবা স্বল্প সময়ে করার নতুন নির্দেশনা এলো সাংবিধানিক সংস্থাটির।
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন চালুর পর দেশের ১০ কোটি ১৮ লাখেরও বেশি নাগরিক তালিকাভুক্ত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই এনআইডি হাতে পেয়েছে। কিন্তু যারা দেশের বাইরে রয়েছে, তাদের মধ্যে সরকারি হিসাবে, ১৬২টি দেশে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি রয়েছে।
প্রবাসীদের বিদেশে ভোটার করার বিষয়ে ২০১০ সালে ভোটার তালিকা আইনে সংশোধন আনা হলেও কোনো বিধিমালা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার ২২ অগাস্ট গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক মতবিনিময় সভায় ‘দেশে এলে প্রবাসীদের এনআইডি কার্ড’ দিতে বিশেষ আদেশ জারির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন, এনআইডি’র ভুল সংশোধন, ভোটার এলাকা স্থানান্তর, নতুন অথবা প্রতিস্থাপিত জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান সংক্রান্ত’ নির্দেশনা পাঠিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
দেশের প্রবাসী আয়ের প্রবাহ সচল রাখায় তাদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি জানান, তারা খুব স্বল্প সময়ের জন্য দেশে আসেন। যে কোনো সেবা নিতে তাদের এনআইডি অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ছাড়াও সারা বছর এনআইডি সেবা দেওয়া হয়। বিদেশ ফেরতপ্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে এলে যেন দ্রুততার সঙ্গে সেবা পায়, তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় ন্যূনতম কাগজপত্রের ভিত্তিতে অথবা ভোটার নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঘাটতি থাকলেও অগ্রাধিকারভিত্তিতে তার পূরণকৃত ফরমের ডাটা এন্ট্রি ও বায়োমেট্রিক নিয়ে নিতে উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রবাসীর মনোনীত প্রতিধির মাধ্যমে কাগজপত্র নিয়ে বা তদন্ত করে ডাটা আপলোড করা যায়।
ভুল সংশোধন, ঠিকানা পরিবর্তন ও ডুপ্লিকেট সংগ্রহ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলেও আবেদনপত্র জমা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ভোটার এলাকা স্থানান্তর (ঠিকানা পরিবর্তন) এবং হারানো বা নষ্ট হওয়া আইডি কার্ড ডুপ্লিকেট সংগ্রহের আবেদনও দ্রুত আমলে নিয়ে সেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এনআইডি উইং।