বাংলা অনলাইনে মুক্ত জ্ঞানের মেলা ‘শিক্ষক’ এর কোরিয়ান ভাষার অনলাইন কোর্স কোরিয়ান ভাষায় সহজ পাঠ। কোর্সটি পরিচালনা করছেন রিফাত ফারজানা। শিক্ষক ডট কমের পাশাপাশি বাংলা টেলিগ্রাফেও এই কোর্সের লেকচারগুলো নিয়মিতভাবে পাঠকদের জন্য দেওয়া হচ্ছে। আজকে দেখুন পঞ্চম লেকচার।
ধরুন হুট করে কোরিয়া যাওয়ার একটা সুযোগ এলো আপনার। সে হতে পারে কোন ইয়ুথ প্রোগ্রাম বা কোন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশীপে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ……কিংবা গুলশান, বনানী বা উত্তরার কোন একটা কোরিয়ান বায়িং হাউজে চাকরী হলো আপনার। ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে আপনার বিপরীতে থাকা কোরিয়ান এমপ্লয়ারকে তার ভাষায় পরিচয় দিয়ে দিননা একটু চমকে…কোরিয়ান ভাষার সহজ পাঠের কোর্সটা মূলতঃ তৈরী করা হয়েছে এই ব্যাপারগুলো মাথায় রেখে। যাতে কোরিয়ান কারো সাথে কথা হলে আপনি যাতে তাকে বলতে পারেন আপনি কে,কি করেন? কোত্থেকে এসেছেন, কতদিন থাকবেন, কোথায় আছেন, কবে-কি বারে-কখন আপনি ঘুরতে যেতে চান, কি কি কেনাকাটা করতে চান, কোন ঋতু আপনার পছন্দ ইত্যাদি…
আমার একটা ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। প্রথমবার গেছি কোরিয়াতে…ওখানে পৌঁছানোর একদিন পর ওরিয়েন্টেশান প্রোগ্রাম। ওদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয় অনেক বিশাল এলাকা জুড়ে। সাইকেল বা বাইক না থাকলে পায়ে হাঁটা ছাড়া কোন উপায় নেই। মেইলে আগে থেকেই ওরিয়েন্টেশানের স্থান, সময় সবই আমাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু যেহেতু আমরা ওখানে নতুন তাই সব চিনে উঠিনি। পথে একটা স্টুডেন্টকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট এফেয়ার্স বিল্ডিং’ টা কোথায়? বুঝতে পারলনা… ভাবলাম ছেলেটাও বোধহয় নতুন। আরেকটু সামনে গিয়ে একটা গ্রুপকে জিজ্ঞাসা করলাম…ওরা বলতে পারলনা। বরং আমার পরণের শাড়ীটা পড়ার পদ্ধতি নিয়েই তারা বেশি চিন্তিত। ওদের প্রশংসায় বিগলিত হাসি বিনিময় করে বিদায় নিলাম। আরো ৭/৮ জনকে জিজ্ঞাসা করে করে আমিতো রীতিমত অবাক। কেউ চেনেনা… আজব সমস্যা। এদিকে সময়ও নেই। একটা বিল্ডিং এর নীচে দাঁড়িয়ে ভাবছি কি করা যায়। তখন আমার কোরিয়ান ভাষার জ্ঞান সামান্যই বলতে হবে (এখনোও সামান্য, তবে ঐ সময়ের চাইতে একটু ভালো)।
নানা কথা ভাবতে ভাবতে দেখি আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বন্ধুটি এগিয়ে আসছে। আমিতো হালে পানি পেলাম। ওকে জিজ্ঞাসা করতেই ও হাসতে শুরু করলো। হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করতেই ও বললো, তুমি ‘ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স বিল্ডিং’ এর নীচ তলাতেই দাঁড়িয়ে আছো। এবার দৌড় দাও। ওরিয়েন্টেশান শুরু হতে আর কেবল পাঁচ মিনিট বাকি। পরে জানলাম একে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা একে ‘국제 학생 담당 실’ বলে ডাকে। উচ্চারণ টা হবে গুগ্জে হাকসেং দামদাং সিল্। গুগজে- ইন্টারন্যাশনাল, হাকসেং- ছাত্র/ছাত্রী, দামদাং-এফেয়ার্স/ব্যবস্থাপনা, সিল-অফিস/রুম।
এহেন কোরিয়াতে আমার গতবছরের অভিজ্ঞতা আগের চেয়ে খানিকটা ভালো। তারপরও কোরিয়ান ভাষা জ্ঞান ছাড়া কোরিয়াতে চলা খুবই কঠিন। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় কোরিয়া খুব সুন্দর একটা দেশ। বিশেষ করে শরৎ আর বসন্তের কোরিয়া…অপূর্ব। তাই এমন দেশ দেখার একটা সুযোগ যদি মিলেই যায় তাহলে তার পুরো সদ্ব্যবহার করতে ভাষাটা জেনে রাখুন…
আজকে আমরা শিখব দিক নির্দেশনা কিভাবে দিতে হয়। ধরুন ব্যবসায়িক কাজে গেছেন ওখানে। হোটেল থেকে ফোন করলেন আপনার বিজনেস্ পার্টনারকে। তিনি হয়ত জানালেন, আপনার হোটেলের মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে রাস্তা পার হয়ে যে বড় বিল্ডিংটা আছে তার ডানে ৫ মিনিট হাঁটা দূরত্বের একটা সাবওয়ে স্টেশন তিনি অপেক্ষমান। তাহলে ডান বাম পেরিয়ে কি করে যাবেন? আপনার কোরিয়ান বস্কে বলুন, তিনি যে ফাইলটা খুঁজছেন সেটা আপনি তাঁর ডেস্কের উপরেই রেখে এসেছেন। সেটাই আজ আমরা শিখব। সাথে আরো কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়…
ক্লাসরুমে যখন আমরা ক্লাস নেই তখন সাধারণত দুই ঘন্টারও কিছু বেশি সময় লাগে ব্যাপারগুলো বোঝাতে। ভিডিও ফাইলের আকার ছোট রাখতে সেইসব বিষয়গুলোই তুলে ধরা হয় যা খুব বেশি প্রয়োজন। আমি অপেক্ষায় থাকি আপনাদের প্রশ্নের। দেখা যায়, একটা প্রশ্নের উত্তর আরো তিনটা সমস্যার সমাধান হয়। কাজেই প্লিজ… আপনাদের প্রশ্নগুলো জানান। আর যেকোন ধরণের পরামর্শ ধন্যবাদ সহকারে গৃহিত হবে।
দিক নির্দেশনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কিছু ভোকাবুলারী
**এই লেকচারগুলো তৈরীর সময় আমি দুটো বই (সেজোং হান-গুগ্-অ-১ এবং নতুন ইপিএস টপিক এর টেক্সট বই’র সহায়তা নিয়েছি)।