মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন দ্রুত বন্ধ না করলে রাখাইন রাজ্যটি দখল করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কয়েকটি ইসলামি দল। আজ শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে জুমার নামাজ-পরবর্তী এক বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামিক দলের নেতারা এই ঘোষণা দেন।
রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান খুন-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশসহ কয়েকটি ইসলামি দল অংশ নেয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তারা আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির বিচার দাবি করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতারা কয়েক দফা কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এর মধ্যে রয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, ১২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ।
তারা ঘোষণা করেন, এই সময়ের মধ্যে নির্যাতন বন্ধ না হলে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও করা হবে এবং এ্ই উদ্দেশ্যে ওইদিন সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে যাত্রা শুরু হবে।
কর্মসূচিতে বলা হয়, এরপরও যদি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না হয়, তাহলে তারা নাফ নদী পার হয়ে রাখাইন রাজ্য ঘেরাও করে তা দখল করে নেয়া হবে।
এই বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম, খেলাফত মজলিশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. আহমেদ আব্দুল কাদের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগাঠনিক সম্পাদক মাওলানা আহমেদ কাশেমীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী সেনা অভিযানের নামে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছ্। মুসলিম অধ্যুষিত গোটা গ্রামটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেনাদের এই বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নারী ও শিশুরাও।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে অভিযান শুরু করার পর থেকে বাংলাদেশে লক্ষণীয় হারে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বেড়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে আবার সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, অনেক রোহিঙ্গাই সীমান্ত থেকে ফেরত যাচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা নিশ্চয়ই মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পড়ে। দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগত নিধনের চেষ্টা করছে।