ভয়াবহ খরায় আক্রান্ত উত্তর কোরিয়া তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে। অনাবৃষ্টির কারণে মূল খাদ্য শস্য উৎপাদিত না হওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কারণে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে দ্বিপাক্ষিক খাদ্য সহায়তা বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রচণ্ড খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। আর এরমধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে দেশটির শিশু ও বৃদ্ধরা। জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, সংকট মেটাতে জরুরিভাবে খাদ্য আমদানি করা প্রয়োজন।
১৯৯০ এর দশকে উত্তর কোরিয়ায় দুর্ভিক্ষের কারণে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) জানায়, চলমান খরা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ নাটকীয়ভাবে কমেছে। উত্তর কোরিয়ার ওপর দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের কারণে এমনটা হয়েছে।
তাছাড়া শস্য উৎপাদনের মূল জায়গাগুলোতে এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হয়েছে। আর এ শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে চাল,ভুট্টা,আলু এবং সয়াবিনের মত শস্য উৎপাদন কমে গেছে। এছাড়া গম ও যব উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের শুরুরদিকের মৌসুমে আগের বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ শস্য উৎপাদন কম হয়েছে। আগের বছর এ সময়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার টন খাদ্য শস্য উৎপাদিত হলেও এবার উৎপাদনের পরিমাণ ৩ লাখ ১০ হাজার টন।
দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার জন্য উত্তর কোরিয়ার যে সক্ষমতা ছিল তাও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার কারণে ফসল ও ঘর বাড়ি নষ্ট হয়েছে। বন্যায় ফসলহানি এবং অপর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন এ দুই মিলে তীব্র খাদ্য সংকট ও অপুষ্টি তৈরি করছে।
জাতিসংঘ জানায়, অপর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদনের কারণে উত্তর কোরিয়ার একটি বিশাল জনগোষ্ঠী অপুষ্টিতে ভুগতে পারে এবং তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এরমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ২০১৭ সালে বছরের শস্য উৎপাদনের অন্যতম সময় পার হয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে অন্ততপক্ষে পরবর্তী তিন মাসের জন্য খাদ্য আমদানি প্রয়োজন।