অন্যদিনের মতো রাস্তায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালনে মশগুল ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল পারভেজ মিয়া। হঠাৎ যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ডোবায় পড়ে যেতে দেখেন। মুহূর্ত বিলম্ব না করে ঝাঁপিয়ে পড়ে একে একে তুলে আনেন অন্তত ২২ যাত্রীকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ডোবার পানিতে লাফিয়ে পড়ে পারভেজ প্রথম বাসের জানালাগুলো ভেঙে ফেলেন। আর সেপথ দিয়ে বের হয়ে আসেন যাত্রীরা। সেসময় নিজেও বাসটিতে ঢুকে বের করে আনেন জীবিত অবস্থায় সাত মাস বয়সী এক শিশুকে। পরে উদ্ধারে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার কনস্টেবল পারভেজের এই বীরোচিত ভূমিকায় ০৭ জুলাই শুক্রবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়নি কেউ। ঢাকা থেকে চাঁদপুরের মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেস বাসটিতে সেসময় অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিল।
ওই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় পেন্নাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার। পারভেজের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তার বুদ্ধিবলে রক্ষা পেয়েছে বহু প্রাণ।’
এদিকে পারভেজের বীরত্বপূর্ণ কাজ ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কিছুক্ষনের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে তা। অনেকেই এ কাজের জন্য তার পদোন্নতি বা রাষ্ট্রায় স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল কালাম জানিয়েছেন, কনস্টেবল পারভেজ মিয়ার এ কর্মতৎপরতায় হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়ন গর্বিত। আর কুমিল্লা রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ বলেন, পুরস্কার দিয়ে এই কাজের মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। তবুও এ কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি যাতে তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পান এ ব্যাপারে সুপারিশ করা হবে।