Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

garmentsতৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে এ খাতে রফতানি আয় ছিল দুই হাজার ৮১৫ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির হিসাবে যা মাত্র শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে এর আগে ২০০১-০২ অর্থবছরে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

পোশাকের রফতানি আয় কমার পেছনে বৈশ্বিক মন্দা, পোশাক খাতের চলমান সংস্কার ও রফতানির নতুন বাজার সৃষ্টি না হওয়াকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় উদ্যোক্তাসহ সরকারকে পোশাক খাত নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সোমবার প্রকাশিত রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

chardike-ad

ইপিবির তথ্য অনুসারে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে পোশাক খাতে মোট রফতানি আয় হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮১৫ কোটি ডলার যা এ খাত থেকে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম। তৈরি পোশাক থেকে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। তৈরি পোশাকের দুটি খাত নিট ও ওভেন কোনোটাতেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এর মধ্যে নিট খাতে মোট আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৭৫ কোটি ডলার, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ শতাংশ কম। আয়ের লক্ষ্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৪১৭ কোটি ডলার।

অন্যদিকে ওভেনে আয়ের লক্ষ্য ছিল ১ হাজার ৬২১ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ২১ শতাংশ আয় কম হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘এই নামমাত্র প্রবৃদ্ধি দেশের তৈরি পোশাক খাতের বাস্তবতারই চিত্র। এতে আমরা খুব অবাক হইনি। কেননা এ খাত এখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এর মধ্যে রয়েছে কারখানাগুলোয় অবকাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম, ইউরোর দরপতন ও শ্রমিক অসন্তোষের মতো বিষয়। তিনি বলেন, এ খাতে বর্তমান সহযোগিতাগুলো অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সরকারের উচিত বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। আগামী দুই বছরের জন্য জাহাজীকরণে ৫ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনারও দাবি জানান তিনি।

ইপিবির তথ্য অনুসারে, সদ্যবিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সামগ্রিকভাবে দেশে ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে তিন হাজার ৪৮৩ কোটি ডলার আয় হয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২১৭ কোটি টাকা কম যা গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ডলার। এ হিসাবে বিদায়ী বছরের ১২ মাসে আগের বছরের তুলনায় মোট রফতানি আয় বেড়েছে ৫৮ কোটি ডলার বা এক দশমিক ৬৮ শতাংশ। অর্থাৎ সারা বছরে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশেরও কম। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে সামগ্রিক রফতানি আয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। কিন্তু আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি।

গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পণ্যের গড় মূল্যহ্রাস ও বৈশ্বিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে এ ভাটা দেখা দিয়েছে। বিপরীতে আমাদের প্রতিযোগীরা ভালো করছে। তিনি তৈরি পোশাক পণ্যের বৈচিত্রকরণের তাগিদ দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন। উল্লেখ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছিল ২ হাজার ৮০৯ কোটি ডলার।