উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সৎভাই কিম জং ন্যামকে আসলে কে হত্যা করেছে! এর সঙ্গে কি উত্তর কোরিয়াই সরাসরি জড়িত! এমন প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। কারণ, কুয়ালালামপুরে অবস্থিত উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের এক কূটনীতিক ও রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা এয়ার কোরিও’র এক কর্মকর্তা এ হত্যাকান্ডে জড়িত বলে সন্দেহ করছে মালয়েশিয়া। এ জন্য ওই দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
দেশটির পুলিশ প্রধান খালিদ আবু বকর বলেছেন, সন্দেহভাজন ওই কূটনীতিক দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি পদ মর্যাদার। অন্যজন এয়ার কোরিও’র একজন কর্মকর্তা। তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয় নি। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়েছেন খালিদ আবু বকর। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিহত হন কিম জং ন্যাম। ওই সময় একটি ফ্লাইটে করে ম্যাকাও যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিমুলক কাজ সারছিলেন তিনি। খালিদ আবু বকর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, পুলিশ মনে করছে হত্যাকান্ডের দিন মালয়েশিয়া থেকে পালিয়ে যায় অন্য চার সন্দেহভাজন উত্তর কোরিয়। পুলিশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছে তারাও এ হত্যায় জড়িত। তারা পালিয়ে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ং ইয়ংয়ে চলে গিয়েছে।
গত সপ্তাহে এ ঘটনায় মালয়েশিয়া পুলিশ গ্রেপ্তার করে উত্তর কোরিয়ার একজন পুরুষ, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার একজন করে দু’জন নারীকে। খালিদ আবু বকর বলেছেন, ওই দু’ নারীই নিহত ব্যক্তির মুখে বিষাক্ত কোনো তরল ছড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সেটা কি তরল তা সনাক্ত করা যায় নি। ওই দু’নারী বিষাক্ত তরল কিম জং ন্যামের মুখে ছড়িয়ে দিয়ে পরে হাত ধুয়ে ফেলে। তাই যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের রিমান্ডের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করবে পুলিশ। ওদিকে কিম জং ন্যামকে হত্যার পর মালয়েশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। নিহতের দেহ এখন কি করা হবে তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চলছে ঠেলাঠেলি।
এ সপ্তাহে পিয়ং ইয়ংয়ে নিয়োজিত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় মালয়েশিয়া। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করায় কুয়ালালামপুরে নিয়োজিত উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে মালয়েশিয়া। পুলিশ বলেছে, নিহত কিম জং ন্যামের মৃতদেহ নিতে তার পরিবারের কোনো সদস্য এগিয়ে আসেন নি অথবা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কোনো নমুনাও দেন নি। ওদিকে কানকথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, এ সপ্তাহের শুরুতে কিম জং ন্যামের এক ছেলে কুয়ালালামপুরে পৌঁছেছেন। এমন কথাও অস্বীকার করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। মালয়েশিয়া বলছে, নিহতের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার পর ও তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই লাশ হস্তান্তর করা হবে। ওদিকে উত্তর কোরিয়া চাইছে মৃতদেহ সরাসরি তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হোক।