উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখলে বিদেশী ব্যাংকগুলোকে নিষেধাজ্ঞা বা জরিমানার মতো শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্র তৈরি কার্যক্রমে অর্থায়নে বিরত রাখতে পিয়ংইয়ংকে পুরো বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্নের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যার অংশ হিসেবেই নতুন এ হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হলো। তবে একে চীনের সঙ্গে সরাসরি অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বের আভাস হিসেবে দেখছেন অনেকে। খবর রয়টার্স ও ইকোনমিক টাইমস।
জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলোর বারবার নিষেধ সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ জানুয়ারিতেও দেশটি হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করে। গত বুধবার মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্বীপবেষ্টিত কমিউনিস্ট দেশটি ‘মুদ্রা পাচারের’ সন্দেহের মধ্যে রেখেছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ চীনকে নতুন করে উদ্বেগে ফেলেছে। আগামী সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, অর্থমন্ত্রী জ্যাক লুসহ যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিনিধি দল বেইজিং আসছে। অর্থনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে বার্ষিক বৈঠকে অংশ নেয়াই তাদের এ সফরের মূল উদ্দেশ্য। একই সময়ে চীনা কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেও এক বিশেষ বৈঠক আয়োজন করেছেন। পাশাপাশি এ দুটি বৈঠকের আয়োজন করায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের ব্যাংক ও শাখাগুলোকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ডলারে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে। মূলত পিয়ংইয়ংকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হবে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এ পদক্ষেপের প্রভাব সরাসরি চীনের ওপরেও পড়বে। কারণ এখন পর্যন্ত চীনই উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। অবশ্য নতুন শাস্তি কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে আরো ৬০ দিন অপেক্ষা করা হবে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা-বিষয়ক বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা অ্যাডাম জোবিন এ প্রসঙ্গে জানান, সাম্প্রতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াকে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া হবে। আমরা আশা করছি, সব দেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে আমাদের পাশে থাকবে।
অবশ্য বেইজিংয়ের সতর্কতা পুনঃউচ্চারণ করে ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ঝু হাইকুয়ান জানান, এ ধরনের পদক্ষেপ হবে যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে নেয়া একতরফা নিষেধাজ্ঞা। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা চীনের কোনো ক্ষতি করবে না। তবে উত্তেজনা উসকে দেবে, এমন যেকোনো পদক্ষেপ আমরা এড়িয়ে যাব।